শ্যামল পল্লীর ছোট্ট নীড়ে, ছায়ায় ঢাকা গাছের ভীড়ে
ভোরের রবির স্নিগ্ধ আভার আলোড়ন জানালায়।
বিহগের কুহু-কুজনে, বিমুগ্ধ প্রাতঃ অনুক্ষণে
সুরের ডানায় কম্পিত মন হারায় অজানায়।।
শিশির স্নাত নরম ঘাসে, কোমল প্রভা মিষ্টি হাসে
কিশোরী মেয়ে শেফালী কুড়ায় আলতা রাঙা পায়।
প্রজাপতি ফুলে মধুর আশে, দৃষ্টি নন্দিত বাহারি বেশে
খেয়ালী মন বেড়ায় উড়ে ঘাস ফড়িংয়ের ডানায়।।
অঘ্রানে ভরা আমন ক্ষেতে, হেমন্ত সৌরভে প্রকৃতি মেতে
ডোবা-জলে বক দাঁড়িয়ে মাছের প্রতীক্ষায়।
উঠানের ছড়ানো ধানে, বুলবুলি চেয়ে একপানে
পাহারায় রত বালিকা কভু দৃষ্টি না ফেরায়।।
রাঙা বাঁধনে ঝুলন্ত বেনুনি, ঝিলিক হাসিতে গ্রামের মণি
খেজুর রসে তার মাতাল চুমুক পল্লী শীতের আভায়।
গোল্লাছুট আর কানামাছি, হাসি-খেলায় লুটো-পুটি
হিজল বনের কাজল ছায়ায় বেলা গড়িয়ে যায়।।
হংস খেলে দিঘীর জলে, কুমারী মেয়ে শাপলা তোলে
ডুব-সাঁতার অবগাহনে ক্লান্ত প্রাণ জুড়ায়।
ভেজা বসনে নগ্ন পায়ে, সিক্ত তনুর নীর গড়িয়ে
লাজুক চোখে ফেরে বাড়ি কোন দিকে না চায়।।
দ্বি-প্রহরের বিজন বেলা, খোলা বাতায়নে বসে একেলা
রাখালী বাঁশির সুরধ্বনি তটে বিতরঙ্গ উছ্লায়।
উচাটন মন দিচ্ছে দোলা, প্রসূন চিত্তে নিত্য খেলা
শান্ত সরোবরে শতদল ফোঁটে সুরের মূর্ছনায়।।
১৫ নভেম্বর, ২০১৬