৹ ম্যানেজার ৹ Rhyme: Free Verse

আমার দেখা, আমার জানা সব সেরা ম্যানেজাররা
হেঁশেলে মুখ গুঁজে রান্না করছে, বাসন মাজছে
ছাতে কাপড় শুকাচ্ছে, কর্তার জামা ইস্তিরি করছে
বাচ্চার প্যানপ্যান, ঘ্যানঘ্যান সামলাচ্ছে
ইচ্ছায়-অনিচ্ছায় বাড়িতে বয়স্ক কেউ থাকলে
অল্প হোক, বেশী হোক, সেবা যত্ন করছে
অন্তত মুখের সামনে ভাতের থালাটি ধরে দিচ্ছে।
ঘর দোর সাফ রাখছে, ধোয়া মোছা করছে।
রবি বারে, রবি বারে, বাথরুম কমোডও ঘষছে।

ইদানীং আবার কাজকাম কম পরেছিল বলেই বোধ হয়
মলে, বাজারে ঘুরে ঘুরে সদাই কিনে আনছে।
কেউ কেউ আবার বাচ্চা কে নিয়ে
ইস্কুল, মাস্টারের বাড়ি দৌড়াচ্ছে।
যাওয়ার পথে, আসার পথে, খোঁজে খোঁজে
সস্তায় এটা সেটা কিনে এনে সংসার চালাচ্ছে।

কিন্তু অতি আশ্চর্যের বিষয় হল গিয়ে এই, যে
ওদের এহেন কাজ কম্ম কারো বিশেষ চোখে পড়ে না।

বিশেষ করে হেঁশেল বাচ্চা সহ ওদের সংসারের যিনি মালিক
রোজ ই ওদের কাজে অনেক দোষ ত্রুটি খুঁজে পায়।

কবে কোন ছোট বেলায় কেউ একজন মালিকের কানে
এমন ফুঁ দিয়েছে - মালিক ঠিক মনে রেখেছে যে
ওদের কে ঢোলের মত ভাবতে হয়
তবে গিয়ে তাল ঠিক থাকে।
তাই সময় সময় মালিক ওদের নিয়ে গানা বাজানা করে।

রাস্তায় কার সংগে দাঁড়িয়ে হাসাহাসি করছিলে?
মাস্টারের বাড়ি গিয়ে দু দু ঘণ্টা করে রোজ চার ছ ঘণ্টা
খুব তো আড্ডা মেরে আসা হয়।
সদাই কিনতে যাওয়া না ছাই-
পার্লারে গিয়ে মুঠো মুঠো টাকার শ্রাদ্ধ করে আসা।
যাক, এর বেশী আর ঘরের কথা না বলাই ঠিক থাকবে।

সারাজীবন আপিস কাছারিতে ঘুরে ঘুরে
কত না ধড়িবাজ, ফাঁকিবাজ, কাম চোর, কথায় পালিশ
অকর্মা, নিষ্কর্মাদের মাসে মাসে পাওনা নিয়ে যেতে দেখলাম
নিয়ে যেতে দিলামও। ওদের পার্টির মালিক ওদের দেখে রাখে।
অমন যে ঘরে হালুম হুলুম করা মালিক, তেনারা ও
আপিসের লোকদের ঘাঁটাঘাঁটি করতে সাহস পান না।
সে অবশ্য অন্য জগত। অন্য বিষয়। অন্য আদব কায়দা।

© পলাশ কুমার রায়, ২০২৪






.