"অক্সিজেন ছাড়া বাঁচে না জীবন;
তাইতো অক্সিজেন এতটা আপন।
দিবস ও রজনী, নিদ্রায় জাগরণে;
অক্সিজেন গ্রহণ করি, প্রতি ক্ষণে।"

শ্রদ্ধেয় কবি শেখ মো. খবির উদ্দিন মহোদয়ের লেখা "অক্সিজেন" কবিতার প্রথম স্তবকেই কবি মনুষ্য জীবনে বায়বীয় অক্সিজেন গ্যাসের প্রয়োজনীয়তার কথা বলেছেন। এমনি মোট ৫ টি ছন্দোবদ্ধ স্তবকে কবি অক্সিজেন কবিতাটি রচনা করেছেন। কবিতাটির রচনা কাল   ৩০/০১/২০২৩ ইং। আমি আজকের আলোচনায় কবির এই কবিতাটি পাঠকের দরবারে এই আশা নিয়ে উপস্থাপন করছি যে কবির গভীর ভাবনার ফসল কবিতাটি পড়ে যেন প্রাণীকূল জ্ঞাত এবং উপকৃত হয়।

  শ্রদ্ধেয় কবি শেখ মো. খবির উদ্দিন মহোদয় মাত্র ১ বছর ১১ মাস হলো বাংলা-কবিতায় আছেন। কিন্তু এই অল্প সময়ের মধ্যেই উনার জমা দেয়া কবিতার সংখ্যা ৬৪০ টি অর্থাৎ প্রতি ১.০৮ দিনে কবি একটি করে কবিতা লিখেছেন / জমা দিয়েছেন। কবি রোজ কবিতা লেখা ছাড়াও নিয়মিত ভাবে অন্যান্য কবিদের লেখা কবিতা পড়ে থাকেন এবং কবিতায় সুচিন্তিত মতামত জানিয়ে মন্তব্য করে কবিদের উৎসাহিত করেন। ফলে বাংলা-কবিতায় কবির নিয়মিত পাঠকের সংখ্যাও বেশ উৎসাহ জনক ভাবেই বৃদ্ধি পাচ্ছে।

চলুন কবির আলোচ্য কবিতা "অক্সিজেন" এ ফিরে যাই-

"অক্সিজেন বাঁচিয়ে তোলে জীবন;
কিন্তু কেমনে বাঁচিবে তোমার মন?
মন ছাড়া চলবে কি তোমার জীবন?
অক্সিজেন চায়, দেহের সাথে এ মন।"

কবিতার এই দ্বিতীয় স্তবকেই কবি প্রশ্ন তুলেছেন যদিও জীবন ধারণের জন্য প্রাকৃতিক অক্সিজেন এর সংস্থান আছে যা দিয়ে প্রাণ রক্ষা হয় কিন্তু সুস্থ ভাবে বাঁচার জন্য আমাদের মন ভাল রাখারও সমান প্রয়োজনীয়তা রয়েছে অর্থাৎ কবি আমাদের অনাবিল মানসিক স্বাস্থ্যের প্রয়োজনীয়তার কথা বললেন। আর এই মন ভাল রাখার জন্যও চাই কোন না কোন অক্সিজেন।  
কি সেই অক্সিজেন? কোথায় গেলে তারে পাই?

"শৈশবে পিতৃমাতৃ স্নেহ ভালোবাসা;
মানে জাগিয়ে তুলে বাঁচার আশা।
যৌবনে চাই প্রিয় কারো ভালোবাসা;
এটাই অক্সিজেন, মনের পিপাসা।"

বাহ! অতি চমৎকার ভাবে কবি ঐ বিশেষ অক্সিজেনের হদিস দিলেন। কি সেই অতি প্রয়োজনীয় অক্সিজেন আর কে তার যোগানদার কবি সুন্দরভাবে তার বর্ণনা করলেন।

"সাথে চাই ভাল চাকরি, উপার্জন;
আরো চাই বন্ধু, যারা হবে সুজন।
সম্মানের সাথে বাঁচার অধিকার,
যোগাবে অক্সিজেন ঘুচাবে আঁধার।"

আরো চাই, আরো অক্সিজেন চাই যাদের ঘাটতি হলে মন-প্রাণ বিষিয়ে যায়। কবি তাঁর চোখে পুরো মানব জীবনে ক্ষেপে ক্ষেপে, জীবনের প্রতিটি পর্যায়ে প্রয়োজনীয় অক্সিজেনের হদিস দিলেন যাতে কবির অভিজ্ঞতার ছাপ পরিস্ফুট হয়েছে।

"বার্ধক্যের অক্সিজেন নাতি নাতনি;
তারাইতো বৃদ্ধ-বৃদ্ধার নয়নের মনি।
ভালোবেসে ভরে তোলো তাদের মন;"

আর সব সময় যে আপনি কেবল অক্সিজেন খুঁজে বেড়াচ্ছেন তাও কিন্তু নয়। আপনি নিজের অজান্তেই আপনার পরবর্তী প্রজন্মে র কাছে একটি বৃদ্ধ বট গাছের মতই অনাবিল অক্সিজেনের অতুল ভাণ্ডার হয়ে জীবনকে সুন্দর ও অর্থময় করে তুলেছেন।

কবির এই অক্সিজেন কবিতাটি যথার্থ ই একটি শিক্ষামূলক রচনা। এই কবিতা পাঠ করা আনন্দময়, এই কবিতা নিঃসংকোচে অন্যের সংগে লাইক-কমেন্ট-শেয়ার করার মতই একটি মনোরম কবিতা।

আমার কথাটি ফুরাল, নটে গাছটি মুড়াল। আপনাদের সবার কাছে আমার একান্ত অনুরোধ কবিতার পাতায় কবিতাটি পড়ে আপনার সুচিন্তিত মন্তব্য দিয়ে কবিকে অবশ্যই উৎসাহ প্রদান করবেন এবং আমাকেও একটু উৎসাহ দিয়া বাধিত করিবেন। সবাইকে অশেষ ধন্যবাদ এবং প্রীতি ও শুভেচ্ছা জানিয়ে এই আলোচনার এখানেই সমাপ্তি ঘোষণা করছি।