"উল্টে দোয়াত সেদিন দুপুর
আকাশখানা কালো
গনগনে রোদ হঠাৎ উধাও
লাগলো ভীষণ ভালো ।
বইলো হাওয়া শনশনিয়ে
ধেয়ে এলো ঝড়
গাছের শাখা উঠলো দুলে
ভাঙছে মড় মড় ।

বাহ! কি সুন্দর করে দুদ্দার করে আসা ঝড়টাকে কবি এত সহজে, এত অল্প কথায়,এত সুন্দর ছন্দে বর্ণনা করলেন!  ঐ "উল্টে দোয়াত সেদিন দুপুর" পড়েই আমি ফিদা হয়ে গেছিলাম। মুহূর্ত টেবিলের সব কালির দোয়াত উল্টে দিলাম- একদম কালো মেঘ হয়ে  আমার গিন্নি র চাঁদপানা মুখ দেখার মতই হল।একটু ঝুঁকি নিলে আপনিও নিজের ঘরে বসে কবির কথার যথার্থতা হাড়ে হাড়ে উপলব্ধি করতে পারবেন।তবে গৃহিনীর গৃহে মজুদ থাকা আবশ্যক।উনিই তো আসন্ন ঝড় কে আবাহন করবেন।তারপর না দোয়াত থাকবে না কালি।না গাছ থাকবে না মালি।..............তবে কোন গৃহযুদ্ধ এই কবিতার বিষয়বস্তু নয়।

সব বলছি, একে একে সব বলছি। উপরোক্ত ৮টি পঙক্তি শ্রদ্ধেয় কবি জামাল ভড় মহোদয়ের "ঝড় বন্যায় ধনী গরিব" ছড়া-কবিতাটি থেকে উদ্ধৃত করা কবিতার প্রথম ৮ পঙক্তি। শ্রদ্ধেয় কবি জামাল ভড় মহোদয় ৪ বছর ২ মাস হলো বাংলা-কবিতায় আছেন। উনি আজ পর্যন্ত ১৪৯২ টি কবিতা বাংলা-কবিতায় জমা দিয়েছেন। অর্থাৎ ১৫২০ দিনে কবি ১৪৯২ কবিতা লিখছেন/ জমা দিয়েছেন। এর বেশী  শ্রদ্ধেয় কবি জামাল ভড় মহোদয় সম্পর্কে আর কিই বা বেশী বলার থাকতে পারে!?

কবি নানাবিধ বিষয়ে কখনো ছড়ার-ছন্দে, কখনো বা গদ্যের ছন্দে উনার কবিতাগুলি লিখেছেন এবং আজ অব্ধি আমি উনার এই অগাধ ভান্ডারের মাত্র এক শতাংশ কবিতাও পড়েছি বলে মনে হয় না। তাই এই কবিতাটিকে কবির কবিতার সবচেয়ে ভাল নমুনা বলেও আমি দাবী করতে পারছি না।

ঝড় আসে ঝড় যায়, আমরা যাদের কোন ঝড়ে ই বলার মত ক্ষতি হয় না অর্থাৎ যারা আমরা আন-এফেক্টেড থাকি, পত্র পত্রিকা পড়েই খবরাখবর পাই। আমরা পড়ি। আমরা যথারীতি ভুলেও যাই। লাভ ক্ষতির হিসাব নিয়েও আমরা বিচলিত হই না এবং এটাই আমাদের জন্য স্বাভাবিক বটে। কিন্তু যাদের কিছু আসে এবং যাদের কিছু যায়, তাদের নিয়ে অত্যন্ত দরদী ভাবনার ফসল এই কবিতা। পড়ুন কবি কি লিখছেন-

"টিনের ঘরের চাল উড়ে যায়
পড়ছে গিয়ে দূরে
ধনী লোকের মেজাজ কিন্তু
আনন্দে ফুরফুরে ।

মজুদদারি করে তাদের
অনেক জমা টাকা
গরিব লোকে কিনতে এসে
পকেট হবে ফাঁকা ।

ঝড় বন্যায় গরিব গুর্বোর
কপাল যখন পোড়ে
ধনী লোকের চওড়া কপাল
আরো তখন গড়ে ।"

এরপর আর কিছু আলোচনার প্রয়োজন থাকছে না। বাকি টা অনুভব আর বিশ্বাস করার বিষয়। আমার অনুরোধ থাকবে কবিতাটি পড়ে ভাল লাগলে কবিতাটির পাতায় গিয়ে আপনার মন্তব্য অবশ্যই রাখবেন। একটা মন্তব্যই কবির লেখনীকে দীর্ঘ জীবন চলতে উৎসাহিত করে, আপনিও তা জানেন।

যদি সম্ভব হয়, আমাকে একটি ধন্যবাদ জানাবেন কবিতাটি নিয়ে আলোচনা করার জন্য।
আপনাদের প্রতিও রইল আমার আন্তরিক শুভেচ্ছা। ধন্যবাদ।