শ্রদ্ধেয় কবি মোহাম্মদ খায়রুল কাদির এর লেখা 'জাতের কি রূপ' কবিতাটি নিয়ে আমার আজকের আলোচনা।
কবি মোহাম্মদ খায়রুল কাদির ২ বছর ৩ মাস হলো বাংলা-কবিতায় আছেন। উনি ইতিমধ্যে ৬৬৮ টি কবিতা বাংলা কবিতায় জমা দিয়েছেন অর্থাৎ গড়ে কবি প্রতি ৩.০৫ দিনে একটি কবিতা আসরে উপস্থাপন করেছেন। কবি কবিতা আসরে একজন নিয়মিত লেখক এবং নিয়মিত পাঠকও বটে। উনি নিয়মিত ভাবে অন্যান্য কবিদের লেখায় উনার সুচিন্তিত মন্তব্য দিয়ে উৎসাহিত করে থাকেন।

কবি মোহাম্মদ খায়রুল কাদির এর লেখা আমার কাছে মূলতঃ রূপকধর্মী বলে মনে হয়।সময় নিয়ে পড়তে হয়, গভীর ভাবে ভাবতে হয়, বিষয় হৃদয়ঙ্গম করতে হয়। আর কবির লেখা সব কবিতাই যে সবাই বুঝতে পারবেন আমার অন্তত এমনটা মনে হয় না। কবির লেখা প্রত্যেকটি কবিতায় সৌন্দর্য ভাবনার গভীরতায় নিমজ্জিত থাকে। অতএব, খুব দ্রুত কবিতাটি পড়ে, বুঝে একটি মন্তব্য দিয়ে বেরিয়ে যাব ভাবলে, সে আশায় গুড়ে বালি। আর কিছুই না পড়ে একটি ছাপানো মন্তব্য দিয়ে দ্রুত কার্য সম্পাদনের ইচ্ছা থাকলে আমার কিছু বলার থাকে না।

কবি আলোচ্য "জাতের কি রূপ" কবিতাটি ০৫/০৩/২০২৩ ইং তারিখে বাংলা-কবিতায় জমা দিয়েছেন। কবি কবিতাটির প্রেরণা হিসাবে বাঙ্গালী আধ্যাত্মিক ফকির সাধক, মানবতাবাদী, সমাজ সংস্কারক এবং দার্শনিক ফকির লালন (অন্য নামে লালন সাঁই, লালন শাহ, লালন কর) এর প্রতি কৃতজ্ঞতাও প্রকাশ করেছেন।

"দলে-সম্প্রদায়ে মেলে পাপড়ি- পাখিদের কূজনে
আর ওলির গুঞ্জনে
কবিকূলের গানে গানে
সুশোভিত সমারোহ সুরভিত ফুলের বাগানে
কবেকার লালন গেয়েছিলো ভূমে
বিদ্বেষ বিষের ওঁই ওঝা রে-
"জাতের কি রূপ..দেখলাম না এই নজরে"

বাঙ্গালী জাতির এই পবিত্র ভূমে যুগে যুগে কত না জাতি ধর্ম সম্প্রদায়ের মিলে মিশে একত্রে শান্তি এবং সৌহার্দপূর্ণভাবে বস বাসের কত না সোনালী স্মৃতি যেন নানা ফুলে সুশোভিত একটি মনোরম কানন। তেমনি আবার জাত পাত বর্ণ ধর্ম নিয়ে যুগে যুগে কত না কীট-পোকার বিধ্বংসী আক্রমনও ছিল-আজও আছে। সাধক লালন ফকির যার জন্ম বৃত্তান্ত, দুটি পরস্পর বিরোধী সম্প্রদায়ের মাঝে প্রশ্ন কণ্টকিত হয়ে যায়, কি অপূর্ব গীত রচনার মাধ্যমেই না উনার সময়ে এই ধর্মীয় অসহিষ্ণুতার বিরোধিতা করে গেছেন। আমরা লালন ফকিরের ভাবনাকে আত্মস্থ যেমন করতে পারিনি, অস্বীকার ও করতে পারিনি। যেন কোন অদৃশ্য আসমানী রিশতা বা বন্ধন পরস্পরকে টেনে ধরে রেখেছে।

অতি কথন মার্জনা করবেন। ওঝা লালন ফকির তার গান দিয়ে যদি আজও এই বিদ্বেষ বিষ কিছুটা লাঘব করতে পারেন এই আশা সতত আমাদের মনে বজায় থাকুক এই কামনা করি। আলোচনা পাঠ করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

এই সুন্দর কবিতাটি লেখার জন্য কবি মোহাম্মদ খায়রুল কাদির এর  ধন্যবাদ প্রাপ্য রয়ে গেছে। আপনি কবির পাতায় গিয়ে আপনার সুচিন্তিত মতামত রাখলে খুবই আনন্দিত হব। আমায় একটি ধন্যবাদ জানালে ও খুশী। ভালো থাকবেন। আগামী দিন গুলির জন্য রইল অজস্র শুভেচ্ছা ও ভালবাসা।