"আমার গাঁয়ের চাঁদে চকচকে আলো,
জোছনায় মন কাড়ে কত লাগে ভালো।
মেঠোপথে হেঁটে যাই চাঁদও সাথে যায়,
সেইসাথে সুধামন কত গান গায়।

কাঁচা-পাকা ধানক্ষেত সুমধুর ঘ্রাণ,
জোছনায় মা-মাটির কত মায়াটান।
সুনসান নীরবতা কী মধুর লাগে,
যতো করি হাঁটাহাঁটি আরো সাধ জাগে।"

কবি শ্রদ্ধেয় - মোঃ সিরাজুল হক ভূঞা মহোদয়ের লেখা "গাঁয়ের চাঁদ" কবিতাটির শুরুর দুটি স্তবকে কবি এমন করেই গাঁয়ের চাঁদের বর্ণনা করেছেন। কবি হাঁটলে চাঁদও কবির সঙ্গে সঙ্গে হাঁটে এমনি তাদের বন্ধুত্ব, ভালবাসা। একজন যেন আর এক জনকে ছেড়ে থাকতেই পারে না। জোছনা রাতে চাঁদের সঙ্গে কবির মনের যোগাযোগ যেন আরো ঘন হয়। কবির মন জুড়ে চাঁদের আবেশ, মায়া আর মাটির মিষ্টি ঘ্রাণ কবিকে আবিষ্ট করে রাখে।

"মেঠোপথে সারিবাঁধা শিমুলের গাছ,
জোছনার ছায়া জুড়ে মহা কারুকাজ।
দৃষ্টির মোচড় উঠে আলোছায়া দেখে,
মন জুড়ে কত দেয় রেখাপাত এঁকে।
জন্ম ভূমির শানে যতো মায়াটান,
পুরোটাই গাঁয়ের পথে বিধাতার দান।
নিরিবিলি মেঠোপথে ছুটে যায় মন,
জোছনার আলো জুড়ে আছে শিহরণ।"

জোছনা রাতে চাঁদের মোহময়তা যেন কখনো শেষ হয়না। কবি শিহরিত হন, কবি চাঁদকে সঙ্গে নিয়ে গ্রামের মেঠো পথে দূর থেকে দূরে হেঁটে যান।

"শহরের ফুটপাতে নেই মায়াটান,
পেরেশানি দিন-রাত সমানে সমান।
বিজলির আলো আর বহুতল বাড়ি,
চাঁদ থাকে ম্রিয়মাণ জ্যামে পড়া গাড়ি।"

কিন্তু শহরের চাঁদ দেখে কবির একদম ভাল লাগে না। "চাঁদ থাকে ম্রিয়মাণ জ্যামে পড়া গাড়ি।" এই চাঁদকে নিয়ে যেন কোন কাব্য মনে আসে না। এই চাঁদকে সঙ্গে নিয়ে হাঁটাও যায় না। আর শহরের ফুটপাতে হাঁটাও বেশ বিরক্তিকর।

"শহরে এসেই বাড়ে ভুঁড়ি আর মেদ,
মানুষে মানুষে আছে শত ভেদাভেদ।
নাই কারো মায়াটান শুধু খাইখাই,
চাঁদ থাকে অগোচরে কোন দাম নাই।"

গ্রামের রূপ বর্ণনায় কবির হাত যশ অত্যন্ত বিরল প্রতিভা। এমন করে গ্রাম বাংলার বর্ণনা সহজে খুঁজে পাওয়া মুশকিল। কবি শ্রদ্ধেয় - মোঃ সিরাজুল হক ভূঞা ২ বছর ১০ মাস হলো বাংলা-কবিতায় আছেন। ইতিমধ্যে কবি ৭৫৪ টি কবিতা বাংলা-কবিতায় জমা দিয়েছেন। অর্থাৎ গড়ে প্রতি ১.৩৬ দিনে কবি একেকটি কবিতা জমা দিয়েছেন যা কবির নিয়মিত সদস্য হওয়ার প্রমাণ দাখিল করে। কবি বাংলা-কবিতায় একজন নিয়মিত পাঠকও বটে। উনি নিয়মিত ভাবে বিভিন্ন কবির কবিতা পাঠ করে সুচিন্তিত ও মূল্যবান মন্তব্য দিয়ে থাকেন।

"গাঁয়ের চাঁদ" কবিতাটি কবির পাতায় পড়ে পাঠক তাঁর সুচিন্তিত মতামত দিয়ে কবিকে উৎসাহিত করবেন এই কামনা করি। কবিতাটি নিয়ে আলোচনা করার জন্য আমাকে একটি ধন্যবাদ দিলে আমি বাধিত থাকিব। সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে আলোচনাটি এখানেই সমাপ্ত ঘোষণা করছি।