"খোকন সোনার নয়ন ছিলো
স্বচ্ছ দুটি আয়না,
ঈদ এলেই ধরত খোকা
চন্দ্র ছোঁয়ার বায়না!
ঈদের দিনে সবার আগে
জাগত আমার খোকা,
নতুন পোশাক পরিয়ে দিতাম
দিতাম আতর ফোটা।"
শ্রদ্ধেয়া কবি ড. শাহানারা মশিউর (চারুলতা কবি) এর লেখা "চন্দ্র ছোঁয়ার বায়না" কবিতাটি ঠিক এভাবেই শুরু হয়েছে। খুবই সহজ ছন্দে লেখা কবিতাটিতে অন্ত মিলে ABAB Rhyme Scheme মানা হয়েছে। পাঁচটি স্তবকে বিভক্ত এই ২০ পঙক্তির মনোরম কবিতাটিতে এমন একজন মায়ের মনের কথা বলা হয়েছে যাঁর সন্তান দুর্ভাগ্য বশতঃ পবিত্র ঈদের দিনও জেলে থাকছে এবং মায়ের স্নেহ বঞ্চিত হয়ে রয়েছে। পবিত্র ঈদের দিনে মা কি ভাবছে, ছেলে কি ভাবছে, এই নিয়ে লেখা কবিতাটি আমার খুবই ভাল লেগেছে।
"ঈদের নামাজ পড়তে যেত
বাবার হাতটি ধরে,
ঈদ সালামি পেয়ে পেয়ে
পকেট যেত ভরে।
মায়ের হাতের স্বাদের রান্না
ছেলের অনেক প্রিয়,
মা গো আজকে একটু খাবার
জেলখানায় পাঠিয়ো।
বিমান চালক হয়নি সন্তান
যায়নি চাঁদের দেশে,
স্বপ্ন পক্ষী হয় অলক্ষী
কারাকক্ষে এসে!"
শ্রদ্ধেয়া কবি ড. শাহানারা মশিউর (চারুলতা কবি) ৭ বছর ৪ মাস হলো বাংলা-কবিতায় আছেন এবং এ যাবৎ কবি মোট ২১৯ টি কবিতা লিখেছেন বা বাংলা-কবিতায় জমা দিয়েছেন। অর্থাৎ গড়ে প্রতি ১২.২১ দিনে কবি এক একটি কবিতা লিখেছেন। তবে কবি অন্যান্য কবিদের লেখার একজন সমঝদার পাঠক। কবি নিয়মিত ভাবে কবিতা পাঠ করেন এবং উনার অত্যন্ত সুচিন্তিত এবং বিশ্লেষণ ধর্মী মন্তব্য সবারই খুব প্রিয়।
কোন কবির কোনো একটি কবিতা যা আমার খুবই ভাল লেগেছে তা নিয়ে আলোচনা করার ইচ্ছা কবে থেকেই হচ্ছিল। আজকে সাহস করে আমার প্রথম প্রয়াস ছিল এই "চন্দ্র ছোঁয়ার বায়না" কবিতাটি। আলোচনায় কি লিখতে হয়, কিভাবে লিখতে হয়, সে সব বিষয়ে আমি এক প্রকার অনভিজ্ঞ বটে। তাই যা কিছু বলা বাকী থেকে গেল , আশা করব, অভিজ্ঞ আলোচক নই বলে মাফ করে দেবেন। আরো আশা করব যে, উল্লেখিত কবিতাটি আপনাদের কেমন লাগলো এ বিষয়ে আপনারাও আপনাদের মতামত জানাবেন। আমার মনে হয়, এইভাবে আমরা নিরপেক্ষ ভাবে আমাদের ভাল লাগা কবিতাগুলির প্রতি আরো বেশী আলোক সম্পাত করতে পারব। কবিতার একজন আগ্রহী পাঠক হিসাবেই আমি বুঝি যে আমরা সবাই ভালো লাগে এমন কবিতা পড়ার জন্য ভারি উৎসুক থাকি।