"ভাবতে আমার অবাক লাগে মায় গিয়েছে মারা,
অবহেলায় অযত্নে তার রেখেছিল যারা।
রোগ শরীরে ভাত রাঁধিত কাপড় কাচত নিজে,
সারা বাড়ি আগলে রাখত রোদ বৃষ্টিতে ভিজে।
নিজের পেটের ক্ষুধার জ্বালা আমায় বলতো খা,
নিজের খাবার আমায় পাতে তিনি আমার মা।"
শ্রদ্ধেয় কবি মোঃ মুসা রচিত "আমার মা," কবিতাটি নিয়ে আজকের আলোচনা। কবিতাটির শুরুর কয়েকটি পঙক্তি উপরে উদ্ধৃত করা হয়েছে। বাংলার প্রত্যেকটি ঘরের পরিচিত মায়ের ছবি সামান্যও ভিন্ন হয় না। যেন একই মাটি দিয়ে সব মায়েদের গড়া হয়।
"রাতের বেলা তরকারি জ্বাল দিতে হতো কষ্ট,
আবদার করত ফ্রিজ আনতে তরকারি হয় নষ্ট।
একটা গ্যাসের চুলার জন্য বলছে কত বার!
কে আনে আর আছে নাকি টাকার কুলাঙ্গার।
একটা পাকা বাথরুম আনতে বলছে বসত বাড়ি,
আনে নাই কেউ দুঃখ নিয়ে গেছে জগৎ ছাড়।"
আর মজার ছলে হলেও বলতে হয় যেন প্রত্যেক পরিবারে একটি কুলাঙ্গার পুত্র সন্তান থাকাও যেন ঐ মায়েদের নিয়তি তে লেখা থাকে। তবু সৌভাগ্য যে মায়ের দুঃখ বোঝার মত একটি সু-পুত্রও মায়ের ভাগ্যে থাকে।
"মায়ের সম্পদ বেইচে গেছে ঐ বিদেশের তরে,
ডাইলের পানি খেয়ে খেয়ে জীবন কাটত ঘরে।
মরার কালে হাঁপানি হয় দিলো রসুন বেটে,
এতগুলো রসুন খেয়ে জীবন রয়নি পেটে।
বাড়ির দরজায় মাটি দিলো কবর দিলো তার,
কুত্তা বিলাই হাঁস মুরগিরা আসন বানায় যার।
আমার মায়ের দুঃখ দেখলে খোদার আরশ কাঁপে,
মায়ের কবর হয়নি পাকা বাথরুম পাকা মাপে।"
গ্রাম শহর ভিন্ন হলেও এমন চিত্র যেন সংসারে সর্বত্রই দেখা যায়। কবি এই সমাজ চিত্রেরই একটি দলিল তৈরি করলেন বটে।
শ্রদ্ধেয় কবি মোঃ মুসা ৯ বছর ২ মাস হলো বাংলা-কবিতায় আছেন। উনি আজ অবধি মোট ৬৫৪ টি কবিতা বাংলা-কবিতায় জমা দিয়েছেন অর্থাৎ গড়ে প্রতি ৫.১১ দিনে কবি এক একটি কবিতা লিখেছেন বা জমা দিয়েছেন। তাই বলা যায় কবি মোঃ মুসা একজন স্বভাব কবি এবং বাংলা-কবিতার উনি একজন অন্যতম সহযোগী।
কবিতাটি কবির পাতায় উপস্থিত হয়ে পাঠক পড়বেন এবং সুচিন্তিত মতামত দিয়ে কবিকে বাধিত করবেন এটাই আমার প্রত্যাশা। আমাকে এই আলোচনা লেখার জন্য ধন্যবাদ দিলে উৎসাহিত হব। সবাইকে আমার শুভেচ্ছা জানিয়ে আলোচনা এখানেই শেষ করছি। ধন্যবাদ।