দৃষ্টির ওপাড়ে নুইয়ে পড়েছে আকাশ
শিশির ভেঁজা ভোরের স্নিগ্ধ দূর্বাঘাস
শেফালীর গন্ধভরা গালিচা উঠোন
নিশীথে হাসনাহেনার সুগন্ধি ভূষণ
শুনেছি কত অশ্বত্থ পাতার মর্মর
ঝড়া পাতার জায়নামাজ মাটির পর।
অলস দুপুরে ঘাসফড়িংয়ের মেলা
দেখেছি বিস্তীর্ন মাঠে আবিরের খেলা
কাঁচা ফসলের ক্ষেত বিস্তৃত দিগন্ত
মেঠোপথের ধারে বুনোফুল ফুটন্ত
অবারিত সরষে ক্ষেতের হলুদ ছাঁয়া
আমনের শিষ দুলানো ছন্দে আলেয়া।
শুনেছি গাঙচিল-শালিকের মিষ্টি ডাক
নদীর মৃদুছন্দ দেখেছি শান্ত বাক
নতুন চরে দেখছি মরীচিকা কুহক
পদ্মদিঘি শাপলা বিলে দেখেছি ডাহুক
শীতের শুকনো নদী অজস্র বালিহাঁস
যৌবনভরা ঘন বর্ষার করাল গ্রাস।
রুপোলী গোধূলিতে পাল তোলা নৌকায়
দেখেছি কিশোরী বধূয়া নাইওর যায়
শুনেছি মাঝির কণ্ঠে ভাটিয়ালি গান
বিজন দুপুরে রাখালী বাঁশির তান
ছড়িয়েছি হাত দু'ধারে ধানের গুচ্ছে
আকাশপানে লিখছি চিঠি বেঁধে ঘুড়ি পুচ্ছে।
দেখেছি দুচোখ ভরে পৌষালী কুহেলি
স্বচ্ছ উদার আকাশ রক্তিম গোধূলি
সাঁঝের আকাশে কাক বক নীড়ে ফেরা
দেখেছি চাঁদনী নিশীথ খই ফোটা তারা
তালবনের আড়ালে চাঁদের উঁকিঝুঁকি
বাঁশবাগানে মিটমিট জ্বলছে রাতের জোনাকি।
এই তনুমনে বেঁধেছি গাঁয়ের গন্ধ
বাতাসে তার সুবাস নিই নিত্যনন্দ
তোমার মোহিনী রূপে হয়েছি বিমুগ্ধ
প্রিয় ঠিকানা গাঁও তুমি স্বর্ণসমৃদ্ধ
তোমায় দেখেছি ভালোবেসেছি বারবার
ব্যথা পাই ফিরে যাই গাঁয়ে শতবার।