ইদানীং কেউ আর চিঠি লেখে না-
তবুও তোমাকে লিখব ভেবে অযথা চারটা দিন পার করে দিয়েছি
জ্বর আমার শরীরটাকে যতটা না ক্লান্ত করেছে, মন তার থেকেও বেশি ক্লান্ত;
আর এই হাসপাতালের বিবর্ণ কক্ষ আমাকে অসহিষ্ণু করে তুলছে-
দিনের পর দিন।
প্রতি রাতে শরীরের উত্তাপ যখন পারদের সাথে প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হয়,
আমি ছোট্ট রোদ বারান্দাটায় বসি
আমার গালে তখন মহানগরীর-
লবণক আলো-ছায়া লেগে থাকে;
রাত বারার সাথে সাথে সভ্যতা উন্মাদনায় ফুঁসে উঠে
সভ্যতা আজ কতটা নির্মম হয়ে উঠেছে-
তৃতীয় বিশ্বের হাসপাতাল গুলোয় গেলে সেটা বোঝা যায়
আচ্ছা হাসপাতালের বেডসিট গুলো সাদা হয় কেন, কখনো ভেবেছো?
শওশাঙ্ক রিডেম্পটশান ছবিটা দেখেছ?
কিছু মানুষের জন্মই হয় মুক্ত থাকার জন্য;
তেমনি আমিও তোমাকে মুক্ত করতে চেয়েছিলাম-
পাখির মত, মেঘের মত, নদীর মত
তাই তোমাকে নিয়ে গিয়েছিলাম বিষণ্ণ কালো সমুদ্রের কাছে;
তখন শরতের বিদীর্ণ আকাশ চিৎকার করে বলেছিল, ভালোবাসি!!
"ভালোবাসা" সেও তো এক বাঁধনের নাম,
আমি তো তা চাইনি;
তাই তোমাকে রেখে এসেছিলাম এক নদীর কাছে
বলেছিলাম, যেদিন আমার প্রকাণ্ড হৃদয়ে-
তোমার আর কোন স্মৃতিই অবশিষ্ট থাকবে না,
আমি সেদিন আবার আসবো
কিন্তু দ্যাখো এই আসুখের সময়য়েও তোমাকেই লিখতে বসেছি,
বার বার আমি তোমার কথাই ভাবছি;
আমি জানিনা, তুমি পাখির মত, মেঘের মত, নদীর মত
মুক্ত হতে পেরেছো কিনা,
আমি জানিনা, এই চিঠি তোমার স্পর্শ পাবে কিনা
তবুও যদি পায়,
আমি ভালো নেই, ভীষণ জ্বর; তুমি কি আসবে না?