একটা আবছা সন্ধেবেলা
তুলসীমঞ্চের পাশে শায়িত
আমার ছোট্ট বোনের কচি দেহ
আমার মায়ের বক্ষভেদী বিলাপে
অপ্রস্তুত মালতিফুলের মন কেমন করা সুগন্ধ
দিব্যময় চাঁদের কুষ্ঠরোগীর মত
এক একটা অঙ্গ মাথার উপর খসে পড়া
সেই রাতে চোখ ফেটে একটা কবিতার জন্ম হল.....
পাঁচ বছর খরার পর সেবার বৃষ্টি এল ঝেঁপে
বাবার মলিন উপবীতে রূপালী ধানের সৌরভ
মায়ের কালিমাখা মুখে মৌমাছির গুনগুন
টিনে নতুন ধানের খই,লক্ষীপায়রার কত হইচই
বৃষ্টি এত সুখের হয় !
সেই বছর পরাগ রেনুর স্পর্শসুখের উল্লাসে
একটা কিশোরী কবিতা নাচতে নাচতে
আমার দৃষ্টিপথ থেকে ক্ষণিকের জন্য সরে গেল......
তারপর একদিন একটা মিষ্টি বিকেলে
এক অন্ধকার ইশিজি ঘরের উদ্দেশে যাত্রা
অনন্তের বুক থেকে এক একটা স্থবির মুহূর্ত
খসে পড়ছে
অবশেষে মিলে গিল অনিকেত মৃত্যুর শংসাপত্র
জেনে গেলাম,
যতদিন বেঁচে থাকতে হবে
ছায়া নয়,বাতাস নয়,ঝরাপাতা নয়
করুণাময় কেমোথেরাপির অনুকম্পায়
তেজস্ক্রিয় আগুনের নিচে ঝলসে যেতে হবে
সেইদিন সৌরপাড়ায় একটা কবিতা ভরন্ত
যৌবনে পদার্পণ করল
ঋতুমতী কন্যার বুকের আঁচল সরে গেল
আর আমি আমার সেই আপন আত্মজার
কাছে আজানুলম্বিত হয়ে
পানিপ্রার্থনা করলাম !