আমি চাইনা আমার কোনো সন্তান সন্ততি হোক
যদি হয় যেন ফুলেদের মতো ঝরে যায়
অকালে মরে যায়.......

ছেলে হলে নাম রেখো অশ্রুকুমার
মেয়ে হলে বিষণ্ণময়ী....

উত্তরাধিকার সূত্রে তারা পাবে
একফালি পাথুরে জমি আর
বিগত সাত প্রজন্মের অকর্মণ্যতা ও ব্যর্থতায়
মহাভর রথচক্রের সারথির দায়িত্ব !
আপ্রাণ চেষ্টা করেও তারা একটুও
এগোতে পারবে না, রণক্লান্ত
চাকা আটকে গেছে অলৌকিক দুঃখের গহ্বরে
ঈশানকোণে অরুণোদয়ের পূর্বেই
রথটাকে এগিয়ে
নিয়ে যেতে চাইবে মেঘ- বরফের দেশে
তার আগেই তারা কাদার উপর মুখ থুবড়ে
পড়ে যাবে....

জানি, তারা হবে পান্ডুর মতো হীনবল, নিম্নমেধা ,
ভঙ্গুর স্বাস্থ্যের অধিকারী !
আমার দূষিত রক্ত
বিষাক্ত দিগন্ত
খাপখোলা তরোয়ালের ছায়া
ধুলোয় ঢাকা সবুজ পাতার অশ্রু
নিদারুণ সৌরঝড়
জন্মসূত্রে পাওয়া ঋণাত্মক দারিদ্র্য
ময়লা উপবীত আর ম্রীয়মান গায়ত্রীমন্ত্রের অহংকার
মস্তিকের ভেতর হূলফোটানো
পৈতৃক দহনজ্বালা
তাদের জীবনব্যাপী অলংকার হবে....

আমি জানি , আমার  ছেলেমেয়েরা
আমার মতোই হবে!
অতি বেগুনী রশ্মীর আলোয়
কবিতা লিখবে,
আগুনের উপর দাঁড়িয়ে
ঠান্ডায় কাঁপবে,
পাখির শতছিন্ন পালকের দুঃখে
নতজানু হবে,
চাঁদের নরম আলো প্রতিফলিত হবে
রাঙা চোখের জলে,
প্রশান্ত হাওয়ায়
দুমড়ে মুচড়ে যাবে,
তাদেরও কানে ইয়ারফোন বেয়ে
ভেসে আসবে অভিমানী মৃত্যুর আহ্বান ...


ভালো থেকো মাছরাঙা,শূকপাখি,
কুঁড়চি ফুল-- নীমগাছের তলে...
সিক্ত বসনে স্নিগ্ধ মনে
সন্তানের অস্থি ভাসাই গঙ্গার ঘোলাজলে...