অসহায় ভাগচাষি
লেখক - ওসমান মিঞা
অনেক কষ্টে আদর যত্নে ভাগচাষিরা লাগিয়েছিলো গ্রীষ্মের ধান,
সোনার সে ধান ঘরে তুলতে বেড়িয়ে যাচ্ছে তাহাদের প্রাণ।
প্রথমদিকে ধান দেখে তাদের মনে জেগেছিল বুকভরা আশা,
ভেবেছিল তারা ধানের টাকায় মিটবে তাদের দৈন্যদশা।
কিন্তু ভাগ্যের কী নিদারুণ পরিহাস কী পাপ করেছিল বিধাতায় জানে,
টানা দুইমাস থেকে অতিবৃষ্টি এখনো পর্যন্ত নাহি থামে।
সকালবেলায় রৌদ্র দেখে বেড়িয়ে পরে তারা কাস্তে হাতে,
ধান শুকনোর আশায় তারা দুপুর পযর্ন্ত ধান কাটে।
ধান কাটা শেষে যখনই তারা খেতে বসে,
হটাৎ তখনই কোথা থেকে প্রবল বৃষ্টি ঝেঁপে আসে।
খাওয়া- দাওয়া ফেলে ছুটে চলে তারা গোটাবে ধান,
মাঠের মধ্যে গিয়ে দেখে তারা জলের মধ্যে ধানগুলি সব ভাসমান।
নিরুপায় তারা ধানগুলিকে জলের মধ্য ভাসতে দেখে,
মনে মনে ঠিক করিলো হাতে আর কাটবে না ধান যদি মাঠে মেশিন আসে।
মেশিন আসিলো ধান কাটিলো পাঁচ হাজার টাকা ঘন্টায়,
তবুও তারা হাসিমুখে কহে এ কষ্ট থেকেতো বাঁচা যায়।
সব ধান বাড়ি এনে শিবু মালিকের সাথে ধান বিক্রি করিতে গেল দোকানে,
সব ধান বিক্রির শেষে জমির মালিক স্বশব্দে টাকা গোনে।
টাকা গোনা শেষে মালিক কহে হেসে কিরে শিবু এবার ধানের ফলন কোই?
শিবু বলিলেন দেখিলেনতো এবার একেবারে পাকা ধানে মই।
শিবু বলিলেন বাবু আমি কতো টাকা পাবো?
মালিক বলিলেন তুই নয় বরং আমিই তোর কাছে আরো টাকা পাবো।
এই কথা শুনে শিবুর নয়নে আসিলো জল,
এতো পরিশ্রম করে ধান লাগিয়ে এটাই কী তার ফল?
চোখের জল মুছে নাক মলে আর ধরে দুইটি কান,
পরের বছর গ্রীষ্মে আর লাগাবো নাকো ধান।