গুনে গুনে ২৮ টি বসন্ত চলে গেলো।
একা....।
এই একা কিন্তু সেই একা নয়।
সবার মাঝে বসে একা।
ষোলোতম বসন্তে জীবনে প্রথম প্রেম এসেছিলো।
প্রথম কারো চোখে চোখ রাখা,
প্রথম বুকের মাঝে ডামাডোল টের পাওয়া,
প্রথম রাত জেগে কথা বলা
আর কতো প্রথম এর সূচনা!
প্রথম ভালোবাসি শুনে যেমন
সময় থমকে গিয়েছিলো
তেমনি প্রথম হৃদয়ভাঙ্গনেও
পৃথিবী শূন্য হয়েছিলো।
তারপর থেকেই একা।
আর ও কত বসন্ত
এসে এসে চলে গেলো।
আমার বসন্ত আর রঙ্গীন হয়নি ।
তারপর আবার হঠাৎই এক বর্ষায়
ভেতর কেঁপে উঠেছিল
অজানা আশঙ্কায়।
মনে হলো এই বুঝি সেই।
একি ছাতায় বৃষ্টিতে হেটে চলা
একশ এক কদম হাতে
স্টেশন মোড়ে মাটির ভাড়ে
গরম চা আর ধোয়া ওঠা সিঙ্গারাও
শুধু শেষমেষ হৃদয় পুড়িয়েছে।
এই বারংবার গড়া ভাঙ্গার খেলায়
কি পেয়েছি কি হারিয়েছি
জানিনে।
শুধু জানি
হাত হাত ধরা কিংবা জড়িয়ে ধরা,
ঠোঁটে ঠোঁট রেখে চুম্বন কিংবা শরীরের কাঁপন
সবপেয়েও ভালবাসা পাইনি।
তারপর অনেকগুলো রাত
অনেকগুলো বছর
একাই রাতের তারাদের সাথে কাটিয়ে দিলাম।
খুব অপ্রত্যাশিতভাবেই
একদিন বুঝতে পারলাম
আমার একটা মানুষ হয়েছে
যাকে বলে একান্তই নিজের মানুষ।
যেখানে একাকি এ আমার কেউ খোজ নিতো না
সেখানে প্রতিদিন চোখ মেলেই
আজকাল শুভেচ্ছা পাই।
আনমনে হেসেই লজ্জা পাই
হাত ধরলেই মন দিয়ে
শরীরের ঝিমুনী টের পাই।
হঠাৎ যেন, যে আমার দিন কাটে তো রাত কাটেনা
সে আমার দিন ই দ্রুতবেগে ফুরিয়ে গেলো।
সময়ের পরিক্রমায় আবার একবার
ভালোবাসার রং বদলে লাল থেকে নীল হলো...
চেনা মানুষ অচেনা হলো।
যার চোখ হারানোর শঙ্কায় ভিজে যেত
তার সামনে আজকাল তাকে পাওয়ার আকুতিতে
আমি ভেঙ্গে চুড়ে হাজার টুকরো হলেও
তার ভেতর আরকাঁদে না।
সে অটল আমার পোস্টমর্টেম এর সিদ্ধান্তে।
আমি আবারও বুঝতে পারি
আমি সবারই শখের,
কিন্তু কারোই একান্ত প্রয়োজনীয় না।
পথের শুরুতে আমাকে পৃথিবী বানিয়ে নিলেও
প্রতিশ্রুতির আকাঙ্খায় সেই পৃথিবী থেকে
বিতাড়িত হই আমি।
সত্যি বলতে কি....
আমার আসলে কেউ নেই.....
কখনই কেউ ছিলো না.....
কখনই কেউ হবেনা.......
সময়ের তৃষ্ণা শেষে
সবাই ই ফিরে নিজের ঠিকানায়...