প্রিয় সমাবেশ,
না না, এটা মিথ্যে কথা।
আপনারা আমার প্রিয় নন।
যেখানে আমি-ই আমার প্রিয় নই
সেখানে আপনারা আমার প্রিয় হবার প্রশ্নই আসে না। সভ্যের মুখোশ পড়া এই নগরে কেউ কারো প্রিয় নয়।
বস্তুত এই পৃথিবী এখন প্রিয় খরায় ভুগছে।
প্রিয় শব্দটা মুছে গেছে মন ও মস্তিষ্ক থেকে,
কিছু প্রিয় এখনো বেঁচে আছে,
কেবল ইতিহাসের পাতায়।
আর –বর্তমান...!!
বৃদ্ধাশ্রমে দেবতাদের বুক ভাঙা কান্নায় দেবালয় কাঁপছে,
কান্নার কারণ প্রিয় সন্তানের অপ্রিয় হওয়া।
কৃষকের আত্মহত্যা, নমিতাদের শাড়িতে আগুন,
কান্তা'র বুকের দোপাট্টা উড়ে গেছে বাতাসে,
তার যোনি'তে পুতে রাখা হয়েছে প্রজন্মের লজ্জা।
মানুষ এখন গান গাইতে পারে আগের চেয়ে বেশি,
আবৃত্তি করতে পারে যেখানে সেখানে,
বক্তব্যে আগুন লাগাতে পারে ধর্মের গ্রন্থে,
মন্দির, মসজিদ ও গীর্জায়।
কিন্তু সত্য বলা যাবে না, একদম না।
সত্য বললে
জিহ্বা ছিড়ে খাইয়ে দেয়া হবে পোষা কুকুর'কে,
ইলেকট্রনিক আদরে চুষে নেওয়া হবে রক্ত,
খাইয়ে দেয়া হবে একে-৪৭ থেকে
ম্যানোফেকচার করা জীবন নাসক ক্যাপসুল।
সত্য বললে গুম, সত্য বললে হত্যা,
সত্য বললে কারাগার।
ভাদ্র মাসের কুকুরের মতো তাকিয়ে আছে
এক ঝাক দুপায়ি জন্তু,
কোনো নারী সত্য বলছে কিনা তারা দেখছে,
বললে-
তার শরীরে চলবে মাসকারবারি কারবার।
অনেক হয়েছে...!!
প্রিয় সমাবেশ,
আমি প্রধানমন্ত্রী হলে
সবার আগে আগুন লাগিয়ে দেবো বৃদ্ধাশ্রমে,
আরামে থাকা সন্তানদের পাঠাবো কারাগারে
মা-বাবাকে আলাদা করার অপরাধে।
যৌতুক প্রথাটা ঠিকই থাকুক,
শুধু একটু উল্টে দিতাম,
কাবিনের টাকা পরিশোধ বিহীন বিয়ে অবৈধ।
ধর্ষকের কেটে নেওয়া হবে পুরুষাঙ্গ,
মিথ্যে বলার অপরাধে কারাদণ্ড, আর্থিক জরিমানা।
আমি প্রধানমন্ত্রী হলে
এক বছরের বাজেটের এক তৃতীয়াংশ
ব্যয় করতাম মানুষের মানসিকতার উন্নয়নে।
শুনুন হে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী,
কে আপনি?
মোদী, হাসিনা, বারডেন,মমতা,নাকি ইমরান খান?
জনগনের ভুলের সাজা নিতে হবে আপনাকেই
যেমন করে সন্তানের ভুলের জন্য গালমন্দ করি বাবা-মা'কে।
হে বিভিন্ন দেশের প্রধানমন্ত্রী বৃন্দ,
আমি আপনাদের জনগনের পক্ষে
আপনাদের কাছে প্রথমে আপনাদেরই বিচার চাই।
তবেই আমি ঘুমাবো।
ধর্মীয় দাঙ্গায় আপনাদের হাত,
বর্ণবাদ উষ্কে দেয়ার মূল হোতাও আপনারা।
কারো বাড়ি উপরে উঠতে উঠতে আকাশের কাছাকাছি,
কেউ পৌছে গেছে পাতালপুরী'তে।
এ বিভেদ আপনারা অথবা
আপনাদের মতো কেউ তৈরী করে দিয়ে গেছে,
এই কুৎসিত বিভেদ ভাঙুন, ভাঙতেই হবে
অথবা নিজেকে ঝুলিয়ে রাখুন ফাঁসির দড়ি'তে।
নয়তো আমার কবিতার মিছিল
পৌছে যাবে আপনার হৃদপিণ্ড ছিঁড়ে নিতে,
তখন পৃথিবী সমস্বরে স্লোগান দেবে–
সাম্যবাদ, জিন্দাবাদ।