জীবন দাশের নিসর্গ ছুঁয়ে দেখেছি,
দেখেছি বাংলার রূপ আমি দু’চোখ ভরে:
যতক্ষণ প্রাণে ধরি শ্বাস; জেগে থাকে বক্ষ মাঝে
স্বপ্নঘুড়ির রঙিন আকাশ, প্রগাঢ় সীমানা জুড়ে।
হাটে মাঠে বাটে ঘুরেছি আমি; দেখেছি মায়ের রূপ
আলভোলা খোকা মায়ের আঁচলে খোঁজে সুখ সুমধুর।
ঊষার আলোতে স্নিগ্ধ বিকেলে কিংবা তমাল ছায়ে
এঁকেবেঁকে পথ হারিয়ে গিয়েছে কোন সে অচিনপুর।
আলপনা আঁকা প্রজাপতি পাখা রঙধনু রঙ মেখে
প্রাণের পরশে রাঙিয়ে নিয়েছি বাংলা মায়ের রূপ।
দেখেছি ফিঙে দোয়েল শ্যামার অরূপ পাখার ঠাঁট
সরিষার ফুলে পাতার বাহারে জমে গাঢ় নিশ্চুপ।
আমি দেখেছি দু’চোখ ভরে কিষাণীর লাউমাচায়
সফেদ ফুলে ছাওয়া সবুজের প্রগলভ্তা, দামে ভাসা
তুলতুলে হংস-ছানার রেশমী-কোমল হরিৎ ডানা
নিভৃতে রচিত কপোত-প্রণয় শীর্ণ বিকেল ঘেঁষা।
স্নিগ্ধ কুসুমের অরুণ প্রভাতে হেরেছি কী বিভা
শাল্মলী-শাখে রঙের আভা জাগায় যে প্রতীতি
নদীকোলে রাধাচূড়া পদমূলে, অশোকের শামিয়ানা
আদিগন্ত সবুজে ফুটে উঠে যেথা হিরণ্ময় দ্যুতি।
বাংলা আমার আকাশে বাতাসে মিশে থাক চিরদিন
জনম-জনমে শোধ হবে না কো বাংলা মায়ের ঋণ।
____________________
⭐ কবিতাটি "বাইনারি সুখের পিদিম" (পৃষ্ঠা-৪১) কাব্যগ্রন্থে প্রকাশিত।