জন অরণ্যের অনতি দূরে
জেগে উঠা প্রবালে
বিরচে সহায়ের সরেস দ্বীপ –
হেথা এক ‘রবিনসন ক্রুশো’;
দুর্জ্ঞেয় আবেগে গড়ে তুলে
অরণ্যপ্রাসাদ – আপনার মনে।
সর্বনেশে ঝড় হানে স্বর্গবাসে,
মন্দাকিনীর ঢেউ এসে
ভাসিয়ে নিয়ে যায়
যোজন পাথারের অথৈ চূড়ায়
অবশেষে ‘মথ’ হয়; রচে যায়
'নিঃশঙ্ক কারাগার' – আপন লালায়।
আশাহীন মরু বুকে ভুলে প্রতিবাদ
দাবানল বহ্নিশিখায় জ্বালায়
দ্রোহের আগুন, নিষ্প্রাণ হতাশায়
ছড়ায় দাহচ্ছটা, অন্ধকার
বন্ধ-কূপে সমর্পিত ‘ক্রুশো’
অসহায় প্রাণ; ছট্-ফট্ বিদারণ
অসীম কুণ্ড মাঝেও ফিরে দেখা –
আর কিছু পিছুটান, আর কোন ভয়?
গোবী-সাহারার বুকে যদি একটি সতেজ শিষ!
কী আশা তার বেঁচে বর্তে
ফলবান হওয়ার? কী বা দাম হেন
অঙ্কুরে লুকোনো প্রাণের?
ভবিষ্যৎ বিহীন –
জড়ান্ধ জীবনের কী বা লোভ এত?
শত প্রতিকূলতার মাঝেও
জীবনের দল মেলার কী বা প্রয়োজন?
বেঁচে আছে কি মরে আছে –
বোধ হয় না কোন,
পাষাণ রুদ্ধ গুহা মাঝে
এ কেমন কানা-মাছি খেলা,
অসহায় জীবনের মুমূর্ষুক্ষণ
মেপে মেপে গড়ায় বেলা!
ক্ষয়িষ্ণু প্রাণের অন্তে যদি বলে – আসি এবার;
কার কি বা দুঃখ তাতে আ-র কী বা খেদ!
ভারবাহী পশু, ছেড়ে দিয়ে হাল;
স্বপ্ন নিঃশেষিত চোখে চেয়ে থাকে
নির্বিকার, যেন শেষ দেখা –
জগতের স-ব সুধা-রস...
তারপর দুনিয়াকে সেলাম!
.... কে বা মনে রাখে তারে আর?
- - - - - - - - - - - - - - - - - - - - - -
★ কবিতাটি 'স্বপ্ন কাজল' (পৃষ্ঠা-৫৯) কাব্যগ্রন্থে প্রকাশিত।