কবি বিভূতি দাসের "মন কেমনের ডাক" কবিতায় অনুপ্রাণিত হয়ে লেখা কবিতাটি তাঁকেই উৎসর্গ করছি।
---------------------------------------------

মন কেমনের মেদুর করা ডাকে
যায় রে ছুটে মন
উদাস নদীর সাড়ে-তের বাঁকে।

জল থইথই ভাদুরে ঝিল কৌমুদিনী রাত
একলা জেগে থাকে
কেমনধারা ঝিমধরা সুর রাত করে দেয় কাত।

ইচ্ছে-দুপুর-ভোর, নেয় যে কেড়ে মন
কিসের টানে বাজে
যাই বুনে কোন সুখ-বেদনার স্বপন?

কালো মেঘের বিষাদ-ঘন ছায়ায়
কী জানি কি থাকে
জুজুর ভীতি জড়িয়ে ধরে মায়ায়!

চৈতি খরায় ঝিঁঝিঁপোকার কর্ণনাদী সুর
বুকের তলায় কাঁদে
বৃষ্টি হলেই টিনের চালে নাচে সেই নূপুর!

নিশিকালে হুক্কা-হুয়ায় পিলে চমকে যায়
বর্ষা ডোবায় বেঙ-কোরাশে
পিদিম কাঁপে, শ্যাম-বিরহীর মন কাঁদায়।

তাজম'লের মর্মরে - জ্বলে ব্যথার আলো
ঐশ্বর্য না মমতাজ
কা'রে গো, শাহজাহান বেসেছিলো ভালো?

একাকীত্বের দহন জ্বালায় পোড়ে যার মন
জলেও নিভে না তা
সে-ই বোঝে; শিখায় থাকে কতটা আগুন।

মনের তলায় কেমন ধারা বিষণ্নতার সুর...
হাতড়ে স্মৃতি যা পাই খুঁজে
মন কেমনের তান, দেখি সব করুণ বিধুর!

যখন দেখি কেউ সরে যায় দূরে কিংবা মরে
উদাসী চোখ বিহ্বলতায় ভাসে
উথলে উঠে কান্নারাশি মন যে কেমন করে।


🔯  কবিতাটি "দ্বাদশ রবির কর" (পৃষ্ঠা - ১৪) কাব্য সংকলনে প্রকাশিত।