মনে পড়ে, মনে পড়ে আজ সেইসব দিন ও রাত্রির কথা;
আলা-দিবসের পলল জমিনে বিক্ষিপ্ত শব্দ-ফোয়ারা,
নৈমত্তিক যাপনের সাদামাটা পাঠ, অনুযোগের ভ্রূভঙ্গি
কি’বা চাঁদের আকর্ষণে খরা নদীর ভরা উচ্ছ্বাস।
মখমল জমিনে তারার স্ফুলিঙ্গে সলমা-কাটা আকাশ
সোনালি রূপালি কত না রঙিন সুতোয় ছিল বোনা!
সময়ের জাবর কাটায় কীভাবে সব হজম হল আজ;
কুয়াশা জোছনায় ক্ষয়ে গেছে সব স্মৃতির রোঁয়া উঠে!
যে সব রমণী ঝড়-জল ও বোধনের চিহ্ন বোঝে
তার রাত আজো ফুলেল শয্যায় আমোদিত ননী,
সৌরভ প্রদোষে কামনার ঝড় তোলে আসন্ন বিকেল
উদ্ভিন্ন ছোবলে নিঃশ্বাসে, এখনো রমণের অর্থ খোঁজে।
অকাতর শ্রীময়তা যদি হয় মাধুর্যের প্রতিশ্রুতি,
সে রমণী তবে ভালবাসার পূর্ণতোয়া নিঃশব্দ নিশি।
জীর্ণ সময় স্বেচ্ছায় সজীবতা ফিরে পেলে তীক্ষ্ণ বোধ
শ্রবণের আঙিনায় সুরের প্রজাপতিরা পাখা মেলে।
উষ্ণতার ছোঁয়ায় বৃন্ত থেকে ঝরে পড়া পরাগ
প্রেমের অভিলাষে পাপড়ি সকাশে সংশ্লেষিত হতে চায়।
জীবন্ত সরসীর নীরে নিশুতি শীত কাঁপন জাগায়,
যারা ভালবাসা বোঝে, চায় – দিতে জানে অফুরান।
বেদনার শৈবালে কোন ভ্রান্ত-বিলাস ফুল হয়ে ফোটে
নির্লিপ্ত ছায়ায় কাঁপে অহরহ কদলীপত্র সম!
অনুভবের নেতানো প্রহর বিপুল স্পষ্টতার আবেশ ছড়িয়ে
হারিয়ে যেতে যেতে ঘরে ফিরে বৈকালিক প্রীতি।
মনোচিন্তনে যে ছায়া চড়ে মায়াবী আলোর রথ
স্মৃতির ঝালর দোলে উঠে দৃশ্যান্তরের পর্দা ছুঁয়ে
কপট আলোয় উড়ে যায় বিস্মরণের ধুলোরাশি;
উদ্ভাসিত হয়ে ফোটে জ্যান্তব তামাশার সৃষ্টি শিখর।
____________________
⭐ কবিতাটি "বাইনারি সুখের পিদিম" (পৃষ্ঠা-৬০) কাব্যগ্রন্থে প্রকাশিত।