প্রকাশিত হল আসরের বরেণ্য কবি ও বিজ্ঞানী ড. খলিলুর রহমানের একক কাব্যগ্রন্থ - 'যে স্মৃতি কথা বলে'। আমার তত্ত্বাবধানে এবং গৌরব প্রকাশন-এর ব্যানারে প্রকাশিত ঝকঝকে মলাটে রঙিন অফসেটে ছাপা ১২০ পৃষ্ঠার বইটিতে কবির ২ বছর ৯ মাসের আসর জীবনে পোস্টকৃত (যা কবি বাংলা কবিতার কল্যাণে রচিত বলে দাবি করেন) ৬৭৭টি কবিতার মধ্যে ঢাউস কলেবরের মাত্র ৭৭টি কবিতা ঠাঁই পেয়েছে। ইতিপূর্বে তাঁর অনেক রচনা আমার সম্পাদনায় প্রকাশিত বহু যৌথ প্রকাশনায় স্থান পেলেও এটিই তাঁর প্রথম একক কাব্যগ্রন্থ। কবিকে অভিনন্দন।
এ যেন এক শিকড় থেকে শিখরে উঠার গল্প। সাদামাটা জীবন যাপনের অধিকারী অথচ সাফল্যের কুশলী কারুকার - স্বল্পভাষী নিরহঙ্কারী প্রথিতযশা সমুদ্র ও নৌ-প্রকৌশলীর একজন দক্ষ শিক্ষক এবং বিজ্ঞানী হয়েও তিনি একজন সফল কবিও বটে। সেই বাংলা প্রবাদটিই যেন মনে করিয়ে দেয় - "যে রাঁধে সে চুলও বাঁধে"। তিনি কেবল সফল প্রকৌশলী, শিক্ষক কিংবা বিজ্ঞানীই নন, একজন জবরদস্ত কবিও এবং তিনি নিজেকে কবি হিসাবে দেখতেই সম্মান বোধ করেন।
নিকটাত্মীয় ছিলই না তেমন, অভিভাবকহারা নিভৃত পল্লীতে সুবিধা বঞ্চিত সাধারণ পরিবারে জন্মগ্রহণ করা এক লড়াকু সৈনিকের জীবনালেখ্য বিধৃত হয়েছে বইটির পাতায় পাতায়। প্রাত্যহিক জীবনের সুখ-দুঃখ হাসি-কান্না, প্রেম-বিরহ, রাজনীতি, অর্থনীতি, বিজ্ঞান, ধর্ম, দর্শন ও আধ্যাত্মবাদের সব বর্ণিল চিত্র ফুটে রয়েছে কবিতার পাতা জুড়ে। যা পাঠে নিবিড় পাঠকের চোখ ভিজে উঠে, রোমাঞ্চিত হয়, গা কাঁটা দিয়ে উঠে, প্রাণে নাড়া দিয়ে যায়। সাদামাটা ভাষায় কবির স্বভাবগত ছন্দ মাধুর্যে রচিত সুললিত কবিতাগুলোতে বস্তুত কবি জীবনের সুখ-দুঃখ হাসি-কান্নার স্মৃতিগুলো পরম যত্নে তুলে ধরেছেন। পড়ে অনেক পাঠকেরই মনে হবে - আরে, এ যেন আমারই কথা! পাশাপাশি মাটি মানুষ ও সমাজের প্রতি একজন সচেতন নাগরিকের দায়বদ্ধতা, সততা, কর্তব্য ও নীতি-নিষ্ঠা এর কিছুই বাদ যায়নি তাঁর কবিতায়।
১২০ পৃষ্ঠার দ্বিতীয় কাব্যগ্রন্থ 'বেলা শেষের রঙ' ও প্রকাশের পথে। স্মর্তব্য, দুটি বইয়েরই প্রচ্ছদ করেছেন গুণী কবির দুই মেধাবী কন্যারত্ন। কবি যেহেতু প্রবাসী সুতরাং কেউ তাঁর বইগুলো সংগ্রহ করতে চাইলে আমার সাথে যোগাযোগ করতে পারেন।
২১ নভেম্বর তাঁর ৫৭তম জন্মদিন। কবির জন্মদিন উপলক্ষে তাঁর হাতে বইটি তুলে দিতে পেরে আমি যুগপৎ গর্বিত, সম্মানিত ও আনন্দিত। নিজেকে খুব ভাগ্যবান বোধ করছি। প্রিয় কবিকে ফুলেল শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাই। বইটির ব্যাপক সফলতা কামনা করি।