আসরের প্রিয় কবি শ. ম. শহীদ রচিত "ভোটের দেশে-৩" শীর্ষক লিমেরিকটি পড়লাম। কবিতাটি ছোট বিধায় পাঠকের সুবিধার্থে এখানে তুলে দিচ্ছি -
"ভোটের দেশে জোটের ঠিকাদারি।
সুযোগ মতো ভাঙবো হাটে হাঁড়ি।
হাঁড়ির ভিতর কাড়ি কাড়ি ধন,
লুটে-পুটেই সাজবো মহাজন!
গুনবি তখন...রাম ছাগলের দাড়ি!"
অনিন্দ্য সুন্দর লিমেরিকটিতে ব্যাঙ্গচ্ছলে আমাদের দেশের রাজনৈতিক দল ও নেতাদের চালচিত্র এবং ভোট প্রচারনার জন্য নেয়া কুট-কৌশলের খানিকটা জ্বলন্ত ছবি ভেসে উঠেছে। ভোট যুদ্ধে জেতার জন্য এরা কত কী ই না করতে পারেন। সমমনাদের নিয়ে জোট বেঁধে ভোটযুদ্ধে জয়ী হয়ে সুযোগ বুঝে আবার তাদের ল্যাং মেরে ঝেড়ে ফেলা থেকে প্রতিপক্ষের চরিত্র হননের উদ্দেশ্যে "হাটে হাঁড়ি ভাঙা"র ভয় দেখিয়ে তাদের কুপোকাত করা, ভোটারদের অবাস্তব ও অলীক সব প্রতিশ্রুতি দিয়ে জয়ী হবার পর সেসব প্রতিশ্রুতিকে প্রহসনে রূপান্তর করা - কী নেই তাতে?
এক কথায়, ভোটযুদ্ধে জয়ী হবার জন্যে সম্ভাব্য যতরকম শঠতার আশ্রয় নেয়া যায় তার সবই আছে তাদের 'রেসিপি'তে।
কবির অঙ্কিত চিত্রটি কোন কল্পিত বিষয় নয়! কাছে থেকে দেখা একেবারেই বাস্তব ঘটনাচক্র। কবিতাটিতে কবির বহুদিনের রাজনৈতিক পর্যবেক্ষণের নির্যাস উঠে এসেছে। যতদূর জানি; ব্যক্তিগত ভাবে কবিকে দীর্ঘদিন এইসব রাজনৈতিক শঠদের জিম্মাদারীও করতে হয়েছে। সেসব তিনি অনেক কাছে থেকেই দেখার সুযোগ পেয়েছেন। তাই রাজনৈতিক নেতা ও তাদের বুলির সাদা-কালো তিনি দাড়ি দেখেই চিনতে পারেন।
সেই বাস্তবতার আলোকে তাই আমি কবির সাথে সহমত পোষণ করছি এই ভাবে -
"হাঁড়ির খবর আমজনতা পায় না কোনদিনই
খবর যাদের নেয়ার কথা নেবো তাদের কিনি
করেছি ভাই হাঁড়ির জিম্মাদারী
তাইতো জানি সকল জারিজুরি
সাদা কালো সবই আমি দাড়ি দেখেই চিনি।"
স্যাটায়ারধর্মী সুন্দর লিমেরিকের জন্য প্রিয় কবিকে আন্তরিক অভিবাদন ও শুভেচ্ছা জানাই।