কবি চিত্ত রঞ্জন সরকার ১ বছর ২ মাস যাবত বাংলা-কবিতায় আছেন। নিয়মিত পোস্টদাতা কবি হিসাবে এরই মধ্যে এই আসরে তিনি ৩৬৮টি কবিতা পোস্ট করেছেন। অবসরপ্রাপ্ত ব্যাঙ্কার কবির জন্মস্থান বাংলাদেশের ফরিদপুর (মাদারীপুর)। বর্তমানে তিনি ভারতের উত্তর ২৪ পরগনা জেলার স্থায়ী বাসিন্দা। আজকের আলোচ্য কবিতা তাঁর 'জীবন হাটের মেলা' - একটি আধ্যাত্মিক ভাবধারার রচনা।
রঙ্গরসে নিমজ্জমান এই জীবনে আমরা প্রায় সবাই জীবন জীবিকা আর উপভোগ নিয়েই ব্যস্ত থাকি। বয়স বেড়ে বিদায়ের সময় ঘনিয়ে না এলে কে ই বা আর পরপারের কথা মনে করি? বয়েসের এক বাঁকে এসে তেমনি কবিও এই কবিতার সূত্রে জীবনান্তের সম্ভাব্য পরিণতি ও পরবর্তী অধ্যায় নিয়ে ভাবনার প্রয়াস পেয়েছেন।
তাঁর এই আধ্যাত্মিক ভাববাদী কবিতার কথামালা স্মরণ করিয়ে দেয় কর্মমুখর যাপিত জীবনের কীর্তি সুকীর্তির কথা। সুখ দুঃখের এই জীবন শেষে একদিন তো ওপারে যেতেই হবে। তার জন্য চাই কিছু রেস্ত - পারাপারের কড়ি বা মাসুল। আমরা কে কতটা তার উপার্জন করতে পারি বা পেরেছি?
চলমান জীবনকে কবি 'রূপসীর হাট' বলে অভিহিত করেছেন। সত্যি, এই এক রূপের হাটই বটে। জন্ম নিয়ে শত ঝড়-ঝঞ্ঝা ব্যথা-বঞ্চনা মোকাবেলা করেও মানুষ কী রূপের মোহেই না নিজেকে অবলীলায় ভুলিয়ে রাখে! এদিকে মেঘে মেঘে বেলা বাড়ার মত সময় যে কখন বিকালের ছায়ায় গড়িয়ে যায়! যখন চেতন ফিরে - মানুষ ভাবতে বসে ওপারের বিষয় নিয়ে। হিসাব কষে এখানে যতকিছু ভোগ-বিলাস আর অর্জনই করি না কেন ওপারের জন্য কে কী সম্পদ সংগ্রহ করতে পেরেছি?
লেখায় কাব্যিকতার মাত্রা কমবেশি যা ই হোক না কেন কবিতার ভাবার্থ খুবই পরিণত ও ভাবনাময়। সুন্দর ভাবধারার এমন কবিতা পাঠকের আধ্যাত্মিক চেতনাকে উজ্জীবিত করে। সুন্দর চেতনা সুন্দর জীবনের সহায়ক। কবির কাছে আরো সুন্দর রচনার প্রত্যাশা রইল। রচয়িতা কবিকে আন্তরিক অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানাই।