তেরো ফুটি ভাগ্য নিয়ে বড়াই
করতেই পারো তুমি
কেন না, জন্মেছো কুসুমের বিছানায়
হাতে সৌভোগ্যের রুপোর কাঠি
মুখে কনক চামচ – ললাটে সোহাগ আদর,
বাবা-মা দাদিমা’র ননীর পুতুল।
একবার ঝেড়ে ফেলে দেখো তো মাটিতে নেমে
কত সহজ জীবিকার এ জগৎ?
নিয়তির ক্রুরহাসি, পিশাচের নখ
গায় মেখে অগ্নিবারুদ দাবানল
কত চড়াই কত মাড়াই সয়ে তবেই
যাপনার এ জীবন ভূমিষ্ট হয়!!
তুমি স্বপ্নের যাদুকর;
চোখের ইশারায় গড়ো স্বপ্নবাসর।
দেখেছো কখনো তুমি ঘরহারা যাযাবর,
পুষ্টির আলোহীন এই হেঁসেলের-সুধা
দেখেছো খেয়ে কভু অপুষ্টির শাকান্ন
কী মধুর স্বাদ আসে এই রসনায়?
তোমার নিমিত্তে জানি বরাদ্দ কেবল
কাড়ি কাড়ি টাকা রত্ন সুনাম যশ
নীল বিষ হৃদে ধরে নীলসুখে সুখী -
আর কিছু অতৃপ্ত নয়ন-ভোগ
আছে এক টুকরো রুটি দুটুকরো শসা
সোনার পালঙ্কে যাপন নিদহারা যামিনী!
সুখের এই গায়ে ঘাম ঝরাতে তুমি
নিয়মিত 'জীমে' যাও, করো লম্ফ-ঝম্ফ
আশি কেজি দেহে বয়েছো কখনো দুকেজির বোঝা
দেখেছো কখনো আধপেটা দেহে শুয়ে টুকরীর পরে
স্বপ্নহীন চোখে যাপিত হয় কী সুখের নিদ –
সে তোমার কত সাধনার ধন?
এসো তবে দ্বিধা ভুলি, এ ভূষণ ঝেড়ে ফেলি
সে জীবন নিই ক্রোড়ে আপনার ভেবে
জাত পাত ঘৃণা ছেড়ে মিশে যাই অকাতরে
জীবন প্রভাতে আনি স্বপ্নের বান
উদয়ের ছায়াপথে গাই এসো সাম্যের গান
তোমাতে আমাতে ঘুচাই বাঁধা; সব ব্যবধান।
- - - - - - - - - - - - - - - - - - - - -
★'সময়ের বাওকুড়ানি' (পৃষ্ঠা-২২) কাব্যগ্রন্থে প্রকাশিত।