নিখিলে লিখেছি তোমার নাম -
হে স্বাধীনতা, হৃদয় অম্বরে মন্দ্র সুর,
এঁকেছি নয়নে চিত্র মহান -
প্রাণ জুড়ানীয়া, আশা জাগানীয়া তুমি;
তমিস্রা-তাড়ানী আলোর ভোর।
মাতৃ-জঠরে বর্ধিষ্ণু ভ্রুণে হৃৎপিন্ড যেমন
কাঁপন তোলে ধমনী শিরায় -
যাম, তিথি, মাস গুণে আসে এ ধরায়।
তেমনি তোমার আবাহনী রাগ;
বাজিছে আমার প্রাণ-প্রণতির গীতে!
তোমার আগত পথের সীমান্ত ছুঁয়ে
হে স্বাধীনতা, শ্যামলে সজীবে গড়া
প্রপিতার মাঠ - হলো পুড়ে ছাই,
স্বপনে এঁকেছি রক্ত প্রদোষে তোমার কবিতাখানি
আকাশখানা লাল হলো যে আমার সবুজ চিড়েই।
মহান দাবীর বিপুল দেনা স্বাধীনতার দায়;
শুধতে হবে মূল্য যে তার পিতৃহারা হয়ে,
মা হয়েছে বীরঙ্গনা, বোন দিয়েছি বলি,
হৃদয় ছিঁড়ে ভাই ত্যাজেছি হেসে,
চঞ্চুপুটে শিস্ ভুলেছে গান হারানো পাখি।
তুমি আসবে বলে - হে স্বাধীনতা
সিঁথির সীমান্ত হতে কত বোন
মুছেছে সিঁদুর, ভেঙেছে কাঁকণ
ঘুম ভেঙে খোকা কেঁদেছে আর্তনাদে
আমার আকাশ ভেসেছে রক্ত জোয়ারে।
’অধীন-হরা মন্ত্র’ ওগো তোমায় পাবো বলে
রক্ত ঢেলে পথ রচেছি শ্যামল প্রান্তরে।
মন্দ্রনাদে রাগ সেঁধেছি, ভয় করেছি দূর
নদীর ধারাও থমকে গেছে স্থির দাঁড়িয়ে স্রোত,
পোষ মানতে কুলীণ হাওয়াও দামাল হলো শেষে।
++++++++++++++++++++++++++++
** স্বাধীনতার এই লগ্নে অশ্রুভেজা কবিতাখানি স্বাধীনতার আত্মত্যাগী শহীদান ও নির্যাতিতা মা-বোনদের উদ্দেশ্যে উৎসর্গ করলাম।
- অনিরুদ্ধ বুলবুল
- - - - - - - - - - - - - - - - - - - - - - - -
★ কবিতাটি 'সময়ের বাওকুড়ানি' (পৃষ্ঠা-৪৬) কাব্যগ্রন্থ এবং
★ কাব্য মঞ্জুষা' (পৃষ্ঠা-১১) কাব্য সংকলনে প্রকাশিত।