স্মৃতিময় নানা বাড়ি (২)
উম্মে আইমান,
নানুযে আমার ভিষন মেজাজি
তবু দরিদ্র দরদি অতুল
দিবা নিশি তিনি খোদার জিকিরে
রহিতেন মশগুল
ইসলাম বিরোধী কর্মকান্ড কভু
কিছু তার শইত না
মনের মত চলত যেজন তারে
তো কিছুই কইত না
খোদার জিকির মুখে না লয়ে
ফালতু প্যাচাল পারত যেই
গায়ের মাথার কাপড় পড়লে
বকা শোনা ছাড়া নিস্তার নেই।
গাঁয়ে বিলাতেন কত যে খাদ্য
গরিব দুঃখির মাঝে
স্থান দিতেন কত অসহায়ে
কত খাটাতেন কাজে
নানুর দুয়ার হতে কেউ কভু
ফিরে নাই খালি হাতে
হাড়ির খাবার ফুরালে বিলাত
যাহা নিত নিজ পাতে
চাল ডাল আর নুন মরিচ সহ
ছয়াবিন কেরোসিন
দান খয়রাত হয় নাই কিছু
ছিলনা এমন দিন
রমজান মাসে বিলাতেন কত
কাঁচা পাকা ইফতারি
এরে দাও কিছু, ওরে দাও কিছু
তারে দিয়ে দাও বাড়ি।
দেখেছি দুুয়ারে দুখিরা দাড়ায়ে
পাত্র লইয়া হাতে
এই হাতে করে মুঠি মুঠি ভাত
বিলায়েছি প্রতি প্রাতে।
সাথিদয় নিয়ে আড্ডা দিতাম
মন ভোলা কত সুরে
নানুর পায়ের শব্দ পেলেও
পালিয়ে যেতাম দূরে
নইলে বকিবে, বলিবে খবিছ
কুরআন পড়তে আয়
নানুরে সকলে বাঘের চেয়েও
করিত ভীষন ভয়
কখনো এতোটা আদরে ডাকিত
বলিবার ভাষা নাই
নিজের খাদ্য নিজে না খেয়ে
সবারে দিতেন তাই।
কখনো মালিশ মাজার অযুহতে
ডেকে ডেকে তবে কয়
ইয়াছিন সূরা মুখস্ত শুুনাবি
আয় মোর পাশে বয়
ফের কহে মোরে যাবিনা কোথাও
শুনবি আমার পড়া
মনে মনে ভাবি কেমন করিয়া
কাটিয়া পড়িব ত্বরা
বৃদ্ধা হলেও সুরেলা কন্ঠে
শুনাত নবীর গান
দোয়া দরুদ আর তিলাওয়াতে তার
অবাক হতো এ প্রান
কখনো নানুর শাসন ভয়ে লুকায়েছি
মামির আঁচল ছায়
সেই নানু আজি সমাধির তলে
ঘুমায়েছে নিরালায়।