বদর পীরের পাহাড় পাশে গুফরান মিয়ার ঘর
সেই ঘরেতে সুখে,দুখে কাটছে জনমভর।
ছনের ছাউনি ,বাঁশের বেড়া ছোট্ট কুড়ে ঘরে
বাস করেন অই গুফরান পাগল অনেক বছর ধরে।
ঝুপড়ি ঘরে নেইকো তাহার শখের তেমন কিছু
ছেড়া জামায় ছেলে মেয়ে ছুটে বেড়ায় পিছু।
ভাঙা টেলা নিয়ে তিনি টেলেন সারা দিন
রোদে পুড়ে গুফরান মিয়ার দেহটা হয় লীন।
ফের কখনো কোদাল লয়ে মাঠে নেমে যান
মাথারই ঘাম পায়ে ফেলে দু মুঠো ভাত খান।
বিবি বাচ্চা সকল নিয়ে কাটছে জীবন আজ
নিত্য এনে নিত্য খাওয়া গুফরান মিয়ার কাজ।
আগের মতো দেহে নেইকো গুফরান মিয়ার বল
কোমর ব্যথা বুকে ধরা পড়ছে চোখের জল।
তার পরেও প্রতিদিনই টেলাখানি টানে
গ্রামে গঞ্জে ঘুরেফিরে দু চার পয়সা আনে।
টেনে টুনে গুফরান মিয়ার কোন রকম চলে
ন্যায় নীতিবান গুফরান মিয়া নিতীর কথাই বলে।
গুফরান মিয়া সময়মতো নামাজ রুজা করে
হালাল রুজি কামাই করে সারা জীবন ধরে।
এমনি করেই জীবন চলে, দুঃখে সুখে যার
নেই যে কোন চাওয়া পাওয়া এই জীবনে আর।
ভাবতে থাকে গভীর রাতে ছেলে মেয়ে নিয়ে
কেমন করে কাটবে জীবন কেমনে দেবে বিয়ে।
কেঁদে কেঁদে বলছে খোদা গুফরান যদি মরে
ছেলে মেয়ে যাবে কোথায় থাকবে কাদের ঘরে।
ভাব জগতে এমনি করে জীবনটা তার কাটে
গ্রামে গঞ্জে টেলা টেনে, কোদাল নিয়ে মাঠে।
হঠাৎ করেই কাল বিকালে আঘাত লাগে পায়ে
বিছানাতে শোয়ার পরে জর আসে তার গায়ে।
খবর শুনে পাহাড় থেকে দরবেশ এলেন নেমে
জমজম পানে কালমা পড়ে জীবন গেল থেমে।
গুফরান মিয়ার ছেলে মেয়ে কেঁদে কেঁদে ডাকে
বাপজান ওগো আস ফিরে এই পৃথিবীর বাঁকে।
দরবেশ তখন আদর করে কাছে ডাকেন আয়
এতিম অনাথ আপন আমার থাকে আমার গায়।
চল সবাই আমার সাথে থাকবে হেসে খেলে
খেয়ে পরে চলবে তোরা যা কিছুই মিলে।