বই বিক্রেতা মেয়েটিকে দেখে
অনেকেই হয়তো তার প্রেমে পড়েছে,
হয়তো অনেক ছেলেই তাকে বলেছে ভালোবাসি।
তার মায়াবী চোখ, গালে ছোট্ট তিল, লম্বা চুল
গায়ের ফর্সা রঙ দেখে,
হয়তো কোনো না কোনো ছেলে বানাতে চেয়েছে
তার কামনার সঙ্গিনী,
কেউবা মেয়েটির ইনবক্সে লিখেছে
হাই, কেমন আছেন, কি করেন ইত্যাদি।
অথচ কেউ কখনো বই বিক্রেতা
মেয়েটির দুঃখ শোনেনি,
জিজ্ঞেস করেনি মেয়ে তোমার কি দুঃখ আছে,
কখনো কোনো পুরুষ তার মাথায়
হাত বুলিয়ে একটু ভালোবাসার আদর দেয়নি।
কবি বিশ্বাস করো
মেয়েটির গালে থাকা ছোট্ট ঐ তিলের কসম,
মেয়েটি অনাদরে অবহেলায় হয়ে উঠেছে পাথর
আমি টের পেয়েছি মেয়েটির মুখের হাসি দেখে।
যখন জানতে পারলাম মেয়েটির মা
খোদার মেহমান হয়েছে
আর পিতা এরপর বেঁধেছে দ্বিতীয় সংসার
মেয়েটি থাকে তার নানীর সঙ্গে,
এবং এই কথাগুলো মেয়েটি সাবলীল ভাষায়
বলে দিলো হেসে হেসে,
আমি টের পেয়েছি তখনই
মেয়েটি পাথর হয়ে গেছে।
কবি বিশ্বাস করো
প্রেম নেই, প্রেমিক নেই
অথচ শাহবাগ, টিএসসি, বইমেলায় কত প্রেম
কত ভালোবাসার রঙঢঙ দেখা যায়,
একে অপরের হাতে হাত রেখে
কাঁধে মাথা রেখে, ঝুঁকে পড়ে এমনভাবে
যেন মনে হয় লুটিয়ে পড়েছে বেহেশতের ফুল।
হায় পরিহাস প্রেম নেই, প্রেমিক নেই
খালি কামনার উত্তেজনা চারিদিকে!
কবি বিশ্বাস করো
আজকাল বড্ড চিন্তা করি মেয়েটির জন্য,
রাত করে বাড়ি ফেরা মেয়েটি নিরাপদে
ফিরেছে কি তার ঘরে,
চারিদিকে মানুষরূপী লেজ ছাড়া কুকুর।
আমি সবচে বেশি ভয় পাই মানুষ
হ্যাঁ কবি,
সবচে বেশি ভয় পাই মানুষরূপী—
এই লেজ ছাড়া কুকুরগুলোকে,
কারণ ওরা যে পশুর চেয়েও নিকৃষ্ট।
খোদা মেয়েটিকে তুমি দেখে রেখো
নিরাপদে রেখো তোমার আশ্রয় তলে,
যেভাবে তুমি মুমিনদের প্রতি দয়া করো
তোমার হাত প্রসারিত করে,
এতিম মেয়েটি তোমারই সৃষ্টি।