নিজ অভিজ্ঞতা থেকে পূর্বের আলোচনার পর এবার বলবো কিভাবে মঞ্চে প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করবেন - এই বিষয়ে।
প্রথমতঃ আপনি যে কবিতাটি নির্বাচন করবেন তা যেন অবশ্যই উক্ত অনুষ্ঠানের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হয়। এবং ৪ থেকে ৫ মিনিটে সমাপ্ত হয় এমন কবিতাই নির্বাচন করুন।
দ্বিতীয়তঃ মাইক্রোফোনের সামনে আপনার দাঁড়াবার ধরন যেন স্বাভাবিক হয়। অর্থাৎ দুই হাত বুকে রেখে বা হাত দুটি পিছনে বেঁধে বা হাত নেড়ে নেড়ে আবৃত্তি করা একেবারেই শোভনীয় নয়। মনে রাখতে হবে আবৃত্তি হল এমন একটি শিল্প যা আপনি শুধুমাত্র আপনার কন্ঠের দ্বারা মানুষের মন জয় করবেন, হাত নেড়ে নাটক করে নয়। আপনার পোশাক যেন শোভনীয় হয়, সেদিকেও নজর দেওয়া প্রয়োজন।
তৃতীয়তঃ আপনি যখন কবিতার আবৃত্তি শুরু করছেন তখন থেকে শেষ অবধি আপনার দৃষ্টি অবশ্যই দর্শকদের দিকে রাখাই শ্রেয়। তবে আবৃত্তির সাথে সাথে দৃষ্টি ক্রমাগত পরিবর্তন করতে থাকলে অনেক সময় আপনি ভুলে যেতে পারেন কবিতার লাইন, যা একেবারেই শোভনীয় নয়। সেক্ষেত্রে আপনি আপনার সোজাসুজি দৃষ্টি নিক্ষেপ করুন কোন এক স্থির বস্তুর দিকে, যাতে দর্শকদের মনে হবে আপনি ওনাদের দিকেই তাকিয়ে আবৃত্তি করছেন, তাতে খুবই সুন্দরভাবে উপস্থাপন করতে পারবেন।
চতুর্থতঃ কবিতা আবৃত্তি উপস্থাপনায় খেয়াল রাখুন - মুখস্থ, উত্থান-পতন ও লয়, ছেদ-যোতিতে স্বরক্ষেপন, সামগ্রিক ভাবপ্রকাশ ও শুদ্ধ উচ্চারণে কন্ঠের সঞ্চালনা যেন স্বাভাবিক হয়। কারন সাধারণত এই পাঁচটি দিক বিবেচনা করে বিচারক মন্ডলী নম্বর দেন। অতিরিক্ত সুর করে বা উচ্চস্বরে কখনোই আবৃত্তি বলবেন না।
সবশেষে বলি, আপনি যদি আবৃত্তিতে আবহ সংগীত ব্যবহার করেন অবশ্যই বাড়িতে বার বার আবহের সাথে অভ্যাস করতে হবে এবং মঞ্চে আবৃত্তি করার সময় সবদিক বজায় রেখে আবহের দিকে কান খাড়া রাখতে হবে।
এইসকল বিষয়গুলি মেনে আবৃত্তি উপস্থাপনা করা প্রথম প্রথম কিছুটা অসুবিধা হলেও, ধীরে ধীরে অভ্যাসে আপনার মঞ্চ উপস্থাপনা সুন্দর হয়ে উঠবে, আর আপনিও সফলতা লাভ করবেন।
সবাইকে জানাই প্রীতি ও শুভেচ্ছা।