(কথপোকথন)

-- তুমি আজকাল বড্ড হেঁয়ালি করো সৌমেন!
-- কেন? হেঁয়ালির কি দেখলে মিতা?
-- আমি বলেছিলাম, একটা ছোট্ট বাড়ি চাই আমার - নিরালা নির্জন। আর তুমি, বানিয়ে দিলে এক জাহাজ মার্কা ইমারত। এখন ঘর সাজাতে চাইলে তোমার আপত্তি দেখি!
-- ঘর সাজাতে তুমিতো আছো। পুবের বাগানে লাগিয়েছো রঙ-বেরঙের অগুনতি ফুলের গাছ। যা যা চেয়েছো তার থেকেও বেশি এনে দিয়েছি, তোমার চাহিদার অতিরিক্ত। তাই দিয়েই না হয় সাজিয়ে দিলে এই বাড়ির সবকটি ঘর। মালিনী যখন বাড়ির মধ্যমনি তখন আমার চিন্তা কিসের!
-- তাই বলে শুধু ফুল দিয়ে সাজাবো  ঘর! চেয়ার, টেবিল, আলমারি, সোফা, পেন্টটিং... এসব কিছুর সাথে তোমার লেখা কবিতার বইও থাকবে আমার অন্দরমহলে। তুমি চাও না এমনটা?
-- আমি চাই বা না-চাই, তুমি যা চাইছো সেটাই করো।
-- একেই বলে হেঁয়ালি। তোমরা পুরুষরা নিজেদের দোষ দেখতেই পাও না।
-- দোষ বা গুণ যাই থাক, সেটাতো শুধু আমার ব্যক্তিগত।
-- না মশাই। তোমার সম্মানে আমি যেমন সম্মান বোধ করি, তেমনি তোমার অসম্মানে কষ্ট পাই। আচ্ছা,আমার কোন কাজে যদি সাফল্য আসে তুমি খুশি হবে? ...কি হলো, কিছু বলছো না যে!
-- না থাক এসব কথা, এখন উঠি। অনেক বেলা হলো, বাজারে যেতে হবে।
-- আবার সিগারেট ধরাতে যাচ্ছো? ডাক্তার তোমাকে বারণ করেছে সিগারেট খেতে, তবু তুমি শোনো না কেন?  আচ্ছা বেশ, আমার পছন্দের কবিতার বইগুলো তাকের উপর রেখেছি, তুমি একবার দেখে নিও সময় হলে।
-- তুমি কবিতা পড়ো মিতা? আমার লেখা পড়ো!
-- ওমা, পড়বো না কেন! তোমার কবিতার সবকটি ফুল আমার বাগানে শোভা পাচ্ছে। তাদের নাম আলাদা আলাদা হতেই পারে, তবুও আমার কবরীতে জড়িয়ে আছে সারাক্ষণ। শুধু তুমিই দেখো না চোখ মেলে!
-- বুঝেছি এবার।
-- কি বুঝেছো?
-- হোক না তাদের নাম চম্পা, চামেলী অথবা জুঁই। সুগন্ধি শুধু আমার মিতা।
-- ধ্যাৎ, তুমি বড্ড বোকা!