মানবতার মহামন্ত্রে দীক্ষিত রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কাছে ধর্ম মোহ নয়, মোহ থেকে মুক্তি।তাই তিনি লিখেছেন-
''ধর্মের বেশে মোহ যারে এসে ধরে
অন্ধ সে জন মারে আর শুধু মরে।
নাস্তিক সেও পায় বিধাতার বর,
ধার্মিকতার করে না আড়ম্বর।
শ্রদ্ধা করিয়া জ্বালে বুদ্ধির আলো,
শাস্ত্র মানে না, মানে মানুষের ভালো।''
'মানুষের ধর্ম' গ্রন্থে তিনি তাঁর উপলব্ধি ব্যক্ত করেছেন,
''মানুষের দেবতা মানুষের মনের মানুষ, জ্ঞানে কর্মে ভাবে যে পরিমাণে সত্য হই সেই পরিমাণেই সেই মনের মানুষ পাই- অন্তরে বিকার ঘটলে সেই আমার আপন মনের মানুষকে মনের মধ্যে দেখতে পাইনে।মানুষের যত কিছু দুর্গতি আছে সেই আপন মনের মানুষকে হারিয়ে, তাকে বাইরের উপকরণে খুঁজতে গিয়ে, অর্থাৎ আপনাকেই পর করে দিয়ে।''
কবির বক্তব্য,
'' ধর্মের সিংহদ্বার খোলা থাকলে তবেই ছোট বড়ো সকল যজ্ঞের নিমন্ত্রণেই মানুষকে আমরা আহ্বান করতে পারব - নতুবা কেবলমাত্র প্রয়োজনের বা স্বাজাত্য-অভিমানের খিড়কির দরজাটুকু যদি খুলে রাখি, তবে ধর্মনিয়মের বাধা অতিক্রম করে সেই ফাঁকটুকুর মধ্য দিয়ে আমাদের দেশের এত প্রভেদ-পার্থক্য, এত বিরোধবিচ্ছেদ গলতে পারবে না।''