দুপুরটায় আজ সন্ধ্যার ঘনঘটা দেখা মিললো। অনেক সময় ধরে আয়োজন চলছিলো উর্ধাকাশে। গুমোট বাধা আবহাওয়া সূর্যকে মানতে নারাজ। কোথাও দেখা মেলেনি প্রখর, কর্কশ রোদেলা রশ্নির। বাতাসের গমনাগমন কিছু সময়ের জন্য সীমিত, যেন আতঙ্কে পরিকল্পনায় লিপ্ত। কি হবে অমানবিক দুনিয়ার! যদি আছড়ে পরে বিরাট আকারের বাজ। (লিখার ঠিক এ মুহূর্তেই বিকট শব্দে বজ্রপাত হয়।)
মনোযোগের কেন্দ্রবিন্দু হল বিকট বজ্রধ্বনি। যেন আকাশটা ফেটেই গেল। কর্ণতালু হঠাৎ নিয়ন্ত্রণ হারালো শব্দ-চাপে কিছু মুহূর্তের। দিশেহারা মগজ স্বস্তির শ্বাস নিলো স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরতে পেরে। দূর-দূরান্তে শব্দ-প্রতিধ্বনি বাধাগ্রস্ত হচ্ছে পথ চলার। ফিরে আসা বাতাস বলে যাচ্ছে কত পথ পেরিয়েছে গগনের বিকট চিৎকার।
গুড়ি গুড়ি ক্রন্দনে মেঘমালা শুরু করলো কাঙ্খিত বারি বর্ষণ। ধুলো মাটি চটকিয়ে কাদায় রুপান্তরে খুব বেশি সময় লাগলো না। কিছু পূর্বের ঘরকুনো বাতাস প্রতিযোগিতায় নামলো বৃষ্টির ফোঁটা বহনে। শার্শির লোহায় মুখ থুবড়ে পড়ে চৌচির হতে লাগলো স্বচ্ছ পানীয়। ঝিরঝিরে কণার অস্তিত্ব বুলিয়ে গেল চেহারার মসৃণ চাদরে। অনিন্দ্য ভালোলাগায় শিহরিত বদন ঝিরঝিরে কণার পরম আদরে।
ভেজা মাটির সোদা গন্ধ নাসিকা রন্দ্রে বিচরিত। যেন পাপ-পঙ্কিলতা ধুয়ে নিষ্কলুষ হচ্ছে। ফিরিয়ে আনতে ব্যাস্ত নিজের হারানো যৌবন। ষোড়শী কন্যার তির্যক চাহনিতে পাগল করছে উন্মুক্ত আকাশকে। বর্ষিত প্রতিটি ফোঁটা গ্রহণ করছে অত্যন্ত মনোযোগের সাথে। দুঃসাধ্য জায়গায় পানি পৌঁছাতে সাহায্য করায় অভিবাদন জানাচ্ছে প্রিয় বন্ধু বাতাসকে।
ধীরেধীরে কমতে শুরু করলো বিগলিত মেঘের জলরাশি। সন্ধ্যামনা আকাশ বেজার করা ভুলে গিয়ে আলোকিত হল শুভ্রতার পরশে। খুশিতে ঝিক করে উঠছিলো মেঘের ফাঁক গলে সূর্যের বিকিরিত রশ্নি।
দল বেধে রওনা হল বিপুল জলীয়বাষ্পের অসংখ্য অগণিত জাহাজ। যেথায় ওষ্ঠ শুকিয়ে কাষ্ঠ বনছে মাটি, ভুলে যেন যায় মেঘমল্লার প্রতি সে ভিষণ নারাজ।