মায়ের পরাণ ফাটিয়া যায়,
রেল লাইনের পাশে গড়াগড়ি খায়
বাছা তুই কি করিলি হায়,
নিজের জীবন সংহার করিলি তায়!
কোন অভিশাপে ছাড়িয়া আপন,
হারালি তোর মূল্যবান জীবন-
বলে আর মায় মূর্ছা যায়,
কি করিলে বাছা, কি লয়ে বাঁচিবে মায়!
একটি ছিল সন্তান তার বুকে
ছিল বড় আশা, হইবে মস্ত বড়-
লেখা পড়া শিখে বিজ্ঞানী হইবে
উদ্ভাবন করিবে কত শত!
সেই বিজ্ঞানই হইল একদা-
গলার ফাঁস, কালরাতের ঘুম......
ব্যকুল হৃদয়ে আহাজারি করে
আর বাছার কপালে দেয় চুম!
বছর আগে ছেলে বলে ছিল-
“মা কিনে দাও মোবাইল ফোন"!
আর কয়টা দিন পরে,
ভাল পাশ করো, মিছে নয় বাবা শোন!
যুগের চাহিদা, ফেরাতে পারিনি-
তের হাজার টাকা তার দাম!
সারারাত জেগে কি যে করিত
বলিতে পারি না তার নাম!
ক্ষণে হাসিত, ক্ষণে খেলিত গেম
আবার চুপি-চুপি কি লেখে-
সারারাত কখন ঘুমায়, কখন
লেখাপড়া করে, কে দেখে ?
হেডফোন লাগায়ে উত্-কর্ণ মনে
নাচিয়া ফিরিত সোনা;
দিন-রাত ফোনালাপ করিত,
কত যে বন্ধু, তা যায়না গোনা!
প্রবাসী বাবা ছেলের লইত খোঁজ
লেখাপড়া কেমন করে-
বাজে ছেলেদের সাথে মিশিও না
বাবা, সারাদিন থাকিও ঘরে!
আজ কুক্ষণে বাহির হইলে তুমি
কানে লাগাইয়া হেডফোন;
হর্ন-ডাক-চিৎকার কর্ণকুহরে
পৌঁছাল না, হইলে তুমি খুন!
আকুলি-বিকুলি করিয়া কাঁদে মায়,
এই কি বিধির লিখন-
একটিই আমার সন্তান, জন্মের পর
করিয়াছি কত যতন!