ওগো শীত, তুমি কি জান? তোমার আগমনে-
ছিন্নমূল সর্বহারা মানুষের কত আহাজারি
রোগাক্লিষ্টের শরীরে কুলোয় না, দুর্বল রক্তধারী
তোমার আগমনে বুড়ো দাদু-নানু, ছিন্ন কাঁথায়
মোড়ানো দেহ খানি কুঁকড়িয়ে যায় বাতের ব্যথায়।
তাদের মনের বাসনা না বুঝে শুধু শুধু কষ্ট দাও।
ওগো হাওয়া, ঠাণ্ডা শীতের হাওয়া, তোমার দাপটে-
উত্তর পাড়ার কলিম সেখের কাঁপতে কাঁপতে হাল বাওয়া
রহিম খাঁয়ের নতুন বউয়ের ভোর-বিহানে পুকুরে নাওয়া
রাস্তায় যাত্রী টানা শীর্ণ দেহের রিকশাওয়ালা
রেল স্টেশনের উদোম শরীরে বুট-পালিশওয়ালা
গুটি-শুটি মেরে বসে আছে তাদের একটু বাঁচাও।
ওগো রোদ, শীতের নিরুত্তাপ রোদ, তোমার দুর্বলতায়-
বৃদ্ধের হিমশীতল রক্তে ঝাঁকুনি দিয়ে তেজ আসে না
লেংড়া-প্রতিবন্ধী ভিক্ষুক গুলো আর ভিক্ষা মাগে না
বস্ত্রহীন ঠাণ্ডায় জমে যাওয়া শিশু বসে থাকে
এক চিলতে উষ্ণ-তাপের আশায় রাস্তার বাঁকে
শিশু বৃদ্ধ সর্বহারাদের প্রতি যদি একটু না চাও।
শীতের রোদ, ওগো শীতের রোদ, তোমার প্রতি-
অকৃত্রিম ভালবাসা নিয়ে বসে আছে অসামর্থ্যের দল
তাদের মনো-বঞ্চনা পূরণ হবে কি না একটু বল
যদি তাদের আকাঙ্ক্ষা পূর্ণ করিতে না পার-
তবে তোমার কাপুরুষোচিৎ বাহাদুরি ছাড়
তুমি অক্ষম, ‘সৃষ্টিকর্তার কাছে মাথা নোয়াও।
=*=