অন্ধকারে কে যেন ডাকে—
ছোট্ট একটা ব্যাগ হাতে!
এগিয়ে এসে ফিসফিসিয়ে বলে,
"এই মামা, কাওরান বাজার যাবে?"

রিকশাওয়ালা তাকিয়ে বলে,
"যাওয়া যাবে, তবে রাতের ভাড়া বেশি।"
কিছু না বলে রিকশায় উঠে,
"চলো, যা চাও, তাই পাবে।"

মাঝরাতে ফাঁকা রাস্তা,
চারপাশে নিস্তব্ধতা থমকে আছে,
কেমন যেন ভয় কাজ করে,
হাতের ব্যাগটা শক্ত করে ধরে।

তার চোখে এক অদ্ভুত শূন্যতা,
মনে হয়, চিন্তার পাহাড় চাপা পড়ে আছে।
কখনো সামনের আলো মিটমিট করে,
আলো কি তবে আঁধারেরই অংশ?

ঘুরেফিরে একটা প্রশ্নই আসে—
"এইদিকে তো কোনো ভয় নাই?"
তারপরও বুক কাঁপে,
শিরায়-উপশিরায় সন্দেহ জাগে।

হঠাৎ লোকটা বলে,
"জানেন, আজ রাতে খুব ভয় হচ্ছে!"
রিকশাওয়ালা তাকিয়ে বলে,
"কিসের এত ভয়, মামা?"

সে শুধু ফিসফিসিয়ে বলে,
"তা বলা যাবে না... ভয় বাড়বে তবে!"
আর প্রশ্ন নয়, এবার এগোতে হবে,
সামনে অজানা এক অন্ধকার অপেক্ষায়!

হঠাৎ রিকশা থামিয়ে দেয় কেউ,
কথা শেষ হওয়ার আগেই!
চারপাশে ছায়ার মতো ছয়টি মুখ,
হাতে ছুরি, চাবুক, আর লালচে দৃষ্টি!

বুঝতে আর দেরি নেই,
শিকার আজ আমরাই!
রিকশাওয়ালার গলায় শুকনো স্বর,
"বাঁচার পথ তো নেই কোনো আর!"

একটা গলির মধ্যে টেনে নিয়ে যায়,
চোখেমুখে তীব্র এক শীতল ভয়!
"টাকাপয়সা দিয়ে দে যা আছে,
নইলে তোর রক্তে রাস্তাটা রাঙাবো!"

কোমর থেকে ছুরি উঁচিয়ে ধরে,
রিকশাওয়ালার চোখে আতঙ্ক খেলে যায়,
"ভাই, যা আছে দিয়ে দিচ্ছি!"
তবুও কি বাঁচবে এই রাতের বিভীষিকা?

পকেট উল্টে দিয়ে দিলাম সব,
রিকশাওয়ালার কাঁপা হাতে কিছু টাকা,
কিন্তু তাতেও মন ভরল না ওদের,
এবার তো প্রাণটাই চায় ওরা!

হঠাৎ দূর থেকে পুলিশের হুইসেল!
লোভী চোখে ওরা থমকে দাঁড়ায়,
কেউ ছুটে পালায়, কেউ মুখ ঢাকে,
আর আমরা বেঁচে যাই, অল্পের জন্য!

রিকশায় উঠে নিঃশ্বাস ফেলি,
এখনো বুক ধড়ফড় করছে!
রিকশাওয়ালা কাঁপা গলায় বলে,
"আজকের রাত আর কাটবে না ভালো!"

ফাঁকা রাস্তায় রিকশা ছুটে চলে,
পেছনে পড়ে থাকে এক দুঃস্বপ্ন!
এই রাত ভুলতে পারবো না কখনো,
এ যে সত্যিকারের "রাতের বিভীষিকা!"