ছয় ঋতুর অমর বাংলা গল্প গুজার অল্প,
নানান রূপে রাঙিয়ে বেড়ায় গল্প হবে স্বল্প।

এখানে মৌনী তাপস গ্রীষ্মে ঘামে দরোদর,
মৃত্তিকা বক্ষ বিদীর্ণ খর তৃষ্ণার্ত প্রান্তর।

মরু রসনায় ঝড়ো হাওয়ায় টগর জবায়,
চুপেই বিদায় ফলের ডালা পসরা সাজায়।

সজল বর্ষা এলো এবার দাবদাহ শেষ করি,
ডাকে গগন পাড়ায় কদম কেয়ায় ভরি।

দূর দিগন্তে দুরন্ত বায়ু ছুটে আসে শোশো,
মাটির শাসন ভেদে চারার আগমন বোবো।

গগন জুড়ে মেঘ মেদুরের ঘন কালো ছায়া,
বর্ষায় নামে ঝমেই বৃষ্টি ভরে পুকুর কায়া।

গ্রীষ্মরা চলে যায় হয় বর্ষারও তিরোভাব,
বাংলার রঙ্গমঞ্চে এবার শরতের আবির্ভাব।

রূপের রাগিনী ধরাপটে মেঘ লঘুভার বলে,
মন্থর ছন্দ তালে নিরুদ্দেশে ভেসে চলে।

আলো ছায়ার কানামাছিতে মালতিরা ফোঁটে,
ভাস্করের আলপনা এঁকে শিশিরেরা টোটে।

রুপালি জোছনা অপরূপ রথের উপাচার,
রূপ মাধুরী খোলে ফুলে রূপের দুয়ার।

ধরার আঁচল ভর ভর আজি সোনার ধানে,
ওগো বিধাতা ফসলে মাঠ পূর্ণ তোমার দানে।

বিষন্ন মুখে এবার হেমন্ত এলো বুঝি দ্বারে,
জৌলুসহীনা কল্যাণী হেমন্ত কড়া নাড়ে।

ফুলে নয় ঘর ভরেছে পূর্ণ সোনার ধানে,
বিদায় তাহার ধূস’ কুয়াশায় নিঃশব্দ চরণে।

আজি এবেলা হিম বুড়ি  বুঝি এলো রে,
সরষে বালারা হাওয়ায় হাওয়ায় দোলেযে।

মটরবনে ঝাউ ঝাড়ে শাক সবজির মেলা,
কুয়াশার চাদরে আড়ালেই বারে বেলা।

পিঠাপুলি খেজুর রসে জমে শীত কনকনে,
রিক্ত ডালপালায় বইছে হাওয়া শনশনে।

তবু শীত গাইছে গীত বসন্তের হবে জয়,
বসন্তেরে বরণ করিতে আর দেরি নয়।

কচি পাতার নূপুর পায়ে অপরাজিতা এলো,
কোকিলের কুহু গীতে মনটা এলোমেলো।

মাধবী গন্ধ মদির বাতাসে বিকশিত মালতি,
ঋতুরাজ তুমি কৃষ্ণচূড়া শিমুলে মধুর মুরতি।

নয়ন ভোলানো রূপে তোমা’ মুগ্ধ মরমী কবি,
বাংলা তোমার জল ছায়া ছবি রহস্যময় সবই।

রচনা কাল:-
৯ই মে, ২০২৪