আষাঢ় দুপুরে অগ্নি দহনে অস্থির প্রাণ
হাহাকার করে প্রান্তর,
মেঘ মেদুরের অম্বরে জাগে ধূস’দোলা রাগ
রিমঝিম ঘন বরষার।
যতদূর হেরি দুর দিগন্তে মেঘেদের পাল
বুনিয়াছে পাংশু জাল,
বর্ষার মেঘ গাঁথিয়াছে মালা বুনো হংসরাগে
থমকিয়ে মহাকাল।
ধূলিধায় পথ মর্মর শোকে গ্রীষ্ম বাসন
দীনতা চিহ্ন মুছে,
বারবার ফিরে কালো মেঘমালা জানে মহাকাল
শুধিয়ে দেখোনা পুছে।
গগনের গাত্রে ভুতেদের ছানা পিঙ্গল কৃষ্ণ
মেঘেদের সমারোহ,
বিজলীর ছটা ছুটাই বাহার আলোঝড় সেথা
ক্ষণেকে মুহুর্মুহু।
ক্ষণেকে গুমরি ঘন মেঘেদের গুড়গুড় কড়
কড় গর্জন তর্জন,
ধূলিধূস’ মরু মালিন্যের অঙ্গে মুগ্ধ মায়াবী
কাজরির মায়াঞ্জন।
অঙ্গে শোভা পায় তার সবুজিয়া ভরা বনগাত্র
কেতকির সু সুবাস,
প্রকৃতির ধূলি ধূস অঙ্গে জরে সবুজিয়া শাড়ি
জীবন্ত পূর্বাভাস।
দামিনী চমক উল্লাসে রাত্রি দিবা সঙ্গ সাজে
ঘনবনে ডাকে ডাহুক,
তমাল কুঞ্জে তরুলতিকার মহা উল্লাস
একবার চোখে চাহুক।
বাদলের ধারা পাত ঝরঝর অবিরাম ধায়
আষাঢ়ের ধারা বর্ষণ,
দিগন্তে দূর পালে ছুটে চলে মাতাল ঝান্ডা
দুরন্ত বায়ু শনশন।
বর্ষারা জাগে মেঘরাঙ্গা বোলে ঝড়েরই কোলে
বন্যা তাণ্ডব ভ্রুকুটি,
বর্ষারা রটে দুঃখ শোকের হা ঘরে হাহাকার
শ্যাম গম্ভীর ভ্রুকুচি।
পদতলে ফেলে ঝড়ের ঝাপটা কমল মায়ায়
কৃষকেরা বীজ বুনে,
সোনা রৌদ্র জলে মাখামাখিতে তা স্বর্ণালীর
নতুনের দিন গুনে।
একহাতে তার বর্ষার বড়া অন্য হাতে ধরি
তার ধ্বংসের প্রলয়,
বিরহীর রাগে অকাল বিরহী হৃদয় সাজিছে
জয়ে প্রেমেরই প্রণয়।
একচোখে তার অবিরাম দান হাসছে শ্রাবণ
অকৃত্রিম সেই হাসি,
অন্যচোখে তার রুদ্রময়ী রুক্ষ ধ্বংসের লীলা
মরমী বিষের বাঁশি।
বর্ষার মায়া কাজলে সূচের খোঁচায় গড়িছে
বিবাগী নকশী কাঁথা,
সূচের খোঁচায় লুকানো সেথায় মর্মর প্রেম
বিরহের দুঃখ ব্যথা।
মনোভূমি হয়ে আজি নব ভাব্যে আনকরা ভাষ্যে
নব্য ভাবরসে সিক্ত,
শ্যামলী মায়ায় জলের ধারায় কবির হৃদয়
কবিতা গাঁথায় উদ্দিপ্ত।
রচনা কাল:-
২২ মে, ২০২৪