ওহে,কে তুমি?
         পরিচয় কি হে তোমার?
         বলো তো দেখি, শুনি।
অঙ্গনা আমি,ললনা আমি,আমি সীমন্তিনী,
আমিই রমণী, আমিই কামিনী।
              ওহে,তুমিই সেই অবলা নারী তবে?
হ্যাঁ,নারী আমি-
তবে অবলা নই তো মোটে।
             হা হা! অহঙ্কার আছে তো বটে।
           হে অবুঝ নারী,কীসের এত অহঙ্কার?
           দিনশেষে তো একটাই ঠিকানা তোমার।
           যতই হও উচ্চশিক্ষিতা, সুউচ্চ ডিগ্রিধারী
          মোটা বেতনের চাকরিজীবী কিংবা নিতান্ত গৃহিণী,
          পরিশেষে তো সেই রসুই ঘর-
           ঘটি-বাটি,স্বামী, সন্তান-সন্ততি।
           করতেই হবে তোমায় সংসার ধর্ম,
          জন্মের উদ্দেশ্যই যে এই,এই যে তোমার কর্ম।
         না দিলে জন্ম তনয়-তনয়া
        সমাজ বলবে নানান কথা,ডাকবে তোমায় অপয়া।
        হে নির্বোধ নারী,মেনে নাও-
        স্বীকার করে নাও-
        যতই হও তুমি সুদর্শনা,সুলোচনা,সুচিষ্মিতা-
        দিনশেষে তুমি কেবল এক -
        যৌবনদীপ্ত লালসিত কায়া।
        এ কি নারী,হাসছো তুমি?

হ্যাঁ পুরুষ,হাসছি আমি।
নির্বুদ্ধিতা তোমার শিরায় শিরায়
তবুও দম্ভ তোমার,কেবল পৌরুষত্বের দোহায়।
হে পুরুষ দম্ভ তোমার,অহঙ্কার তোমার;
তবে সহিষ্ণুতা, ধৈর্যশীলতা!
সে যে কেবল আমার।
হে পুরষ!বোঝো কী প্রসব বেদনা?
জানো কী?সন্তান গর্ভে ধারণের অসহ্য যাতনা!
তবুও সয়েছে জননী, দিয়েছে জন্ম তোমায়,
দিন রাত্রি করেছে পার তোমার অব্যক্ত চাওয়ায়।
ছিলোনা বোধ শক্তি যখন,
এই নির্বোধ জননীই করেছে বোধদয় তখন।
বয়স বেড়েছে তোমার, বর্তেছে দায়িত্ব শুধু,
জননীর পরিবর্তে নিয়েছে দায়িত্ব বধূ।
হে পুরুষ,তবুও বলবে?
নির্ভরশীলতা নারীর,আত্মনির্ভরশীলতা কেবল তোমার?
হে পুরুষ, তবুও বলবে?
স্বয়ংসম্পূর্ণ তুমি,নারী নয় তোমার প্রতিকার?
হে পুরুষ,যতই হও নারীবিমুখ,চিরকুমার তুমি,
কাটেনি কি একটি রাত মায়াবিনী এক নারী কামনা করি?
কেটেছে তোমারও,কেটেছে নারীরও,
তবুও অপরাধিনী নারী,কামিনী নারী,
আর পুরুষ,কেবল তোমার অনর্থক জাড়িজুড়ি।
তবুও বলবে নিতান্ত অবলা আমি?
তবে বেশ, মেনে নিলাম।
অবলা আমি,অপয়া আমি,অসহায় আমি।
অবলা বলেই একা হাতে সংসার সামলিয়েছি।
অপয়া বলেই শত বাঁধা সত্ত্বেও নিয়েছি স্নাতকোত্তর  ডিগ্রী।
হ্যাঁ পুরুষ, অসহায় আমি।
তবুও তোমার মতো পুরুষের সহায় হয়েছি আমি।
তবে পুরুষ, পৌরুষত্ব থাকবে কি চিরকাল?
বার্ধক্যও আসবে জীবনে তোমার।
থাকবেনা এই দম্ভ,থাকবেনা শক্তি পথ চলার।
হে পুরুষ, এখন কীসের শঙ্কা তোমার?
কোথায় হারালো দম্ভ অপার?
ওহে পুরুষ, ভয় পেয়োনা তুমি,
মনে করে দেখো, দিয়েছিলে জন্ম এক তনয়া,
জন্মকালে ফিরিয়েছিলে মুখ,করেছিলে অবহেলা।
তবে বার্ধক্যে এই তনয়াই করবে সেবা,
করবে শুশ্রূষা তোমার।
তবুও কীসের এত অগ্রাহ্যতা তোমার?
হে পুরুষ! মৃত্যুকাল তোমার,
তবুও কি বলবেনা কিছু আর?
            
           মরছি আমি,যাচ্ছি চলে চিরতরে,
           পুরুষ ছিলাম আমি,পুরুষ ;
           বলবোনা কিছু,হার মানবোনা কোনমতে।

হায়রে পুরুষ!
তুমি সত্যিই পুরুষ বটে।