-উন্নয়ন তো হচ্ছে, তুমি দেখছো না, মোহিনী !
-কোন নদীতে কয়টা ঘাট হচ্ছে শুনি? রোজ বিকেলে সেই তো কাক ফাটা নদীর মাঝখানটিতে দাড়িয়েই তর্ক জুড়তে হয় তোমার সাথে !
-কি বলছো; পাকা রাস্তা, উঁচু উঁচু কাঁচ-ঢাকা বাজার, হাসপাতাল ভরা ডাক্তার, তারপর পাড়ার মুদি-দোকানেও এখন ওষুধ পাওয়া যায়, বিজলি-বাতির আলোয় তো রাত কে দিন মনে হয়।
-হুম, তুমি বিজলী বাতিতে আজব বাক্সের দিকেই চেয়ে থাকো। শুনছি জানো, দক্ষিণের বাদা নাকি আর থাকবেনা ! কয়লার ছাইয়ে মরে যাবে সব গাছ। হরিণ; বানর, বাঘ সবাই মরবে। বাওয়ালী আর মৌয়ালিদের দরকারই হবেনা !
-কে বলেছে তোমায়? মিথ্যা সব। কয়লা আসবে বনের পথে, কাকপক্ষীটিও টের পাবেনা। ঘরের মাঝে জাদুর বাক্সের খেলা দেখবো। কতরকম সন্ত্রাসবাদের খেলা। কেউ বলবে কাঁচ কেউবা হীরে।
-তা আর কি জনম দিতে পারো তোমরা??
-কেন ?? স্বপ্নে-মোড়া প্রেমের মরিচীকা দেখাতে পারি ভীষণ রকম।
উন্নয়নের সাথে সাথে রঙচঙে পর্দার ওধারে কান্না আর আবর্জনা জমা হয়। বুড়ো কাকেরা ছিঁড়ে খেতে চায় যে কোন মাংস।
-একটু মূল্যবোধের জন্ম দিতে পারো। বলছি মনুষ্যত্ব আর মানবিকতার সৃষ্টি করতে পারো ! জানি এগুলো তোমার উন্নয়নের সাথে ঠিকঠাক যায়না।
-এই জন্যই তোমায় আমি মোহিনী ডাকি। কখনো তুমি যাকে জীবন বল, খানিক বাদেই তাকে মৃত্যু। কত শতরুপ তোমার ! একরূপে আমার প্রেমিকা রাধা অন্যরূপে শূর্পণখা।