মানব জীবনে সবচেয়ে যার বেশি সম্মুখীন হতে হয় তার নাম অপেক্ষা,
আর এই অপেক্ষা মানব জীবনের সর্বশ্রেষ্ঠ শিক্ষা।
যার মধ্যে নেই কোনো অপেক্ষা হয় সে দানব, না হয় সে পশু,
মায়ের দুধের অপেক্ষায় থাকে সকল শিশু।
আমার যা মনে হয় পশুর ও অপেক্ষা আছে, অপেক্ষা আছে দানবের,
অপেক্ষা সর্বশ্রেষ্ঠ শিক্ষা মানবের।।
শিশু ছিলাম যখন,
বড় হওয়ার অপেক্ষায় ছিলাম তখন।
যৌবনপ্রাপ্ত হয়ে প্রেয়সীকে কাছে পাওয়ার করেছি অপেক্ষা,
কিন্তু মাবাবা মোর অপেক্ষাকে করেছেন উপেক্ষা।
লেখাপড়া শুরু করে দীর্ঘ অপেক্ষায় ছিলাম কবে হবে শেষ,
লেখাপড়া শেষ করে চাকুরীর জন্য ঘুরে বেড়ালাম দেশ থেকে বিদেশ।।
চাকুরী আমি পেয়ে গেলাম-
মাবাবা দেখা শুরু করলো আমার জন্য কনে,
অনেক আনন্দের দোলা লেগেছিল আমারই মনে।
কবে আমি প্রেয়সীকে চিরকালের জন্য পাবো আমার কাছে,
চিরকালের জন্য সে থাকবে মোর পাশে।
অবশেষে প্রিয়ার সনে হয়ে গেলো বাসর রাত,
দীর্ঘ অপেক্ষার পরে মোর জীবনে বুঝি হলো প্রভাত।।
সন্তান পাওয়ার জন্য কতকাল তাকিয়ে রইলাম প্রিয়ার মুখপানে,
সন্তান দিলেন স্রষ্টা,আনন্দের জোয়ার বইলো মনে।
এখন অপেক্ষা মোর সন্তান কবে হবে বড়-
কবে ওদের হবে হুশ,
কবে যে করতে পারবো ওদের মানুষ।
সন্তানেরা বড় হলো, হলো ওরা মানুষ,
পুত্রবধূ আর জামাতা দেখার জন্য আমি হলাম বেহুশ।।
পুত্রবধূ,জামাতা পেয়ে গেলাম সব,
অপেক্ষা এখন শুনবো কবে নাত-নাতনীর কলরব।
ছেলের মেয়ে দাদা ডাকে,মেয়ের ছেলে নানা ডাকে,
হৃদয়েতে পুলক মারে মোর ফাকে ফাকে।
সবকিছু পেলাম আমি,ফেল-পাশ করলাম কতো পরীক্ষায়,
বৃদ্ধ আমার কবে যে হবে মরন,এখন আমি আছি সেই অপেক্ষায়।।
বৃদ্ধ আমি আকাশ পানে তাকিয়ে আছি-
কখন সেই চিরসত্য মরন আসবে,
পরকালেও এমন অপেক্ষা হয়তাবা থেকে যাবে।।