তোমরা আমাকে কবি বলো না।
কবিতা লিখতে বলোনা।
কিছু অক্ষর নিয়ে শব্দের কাছাকাছি
ঘুরে বেড়াই সুবহে সাদিকের সুমধুর ধ্বনি হৃদয়ে লয়ে
বিহঙ্গের কন্ঠে সুরের মূর্ছনায় প্রভাতফেরি প্রতিনিয়ত
প্রাণে ঝঙ্কার তুলে প্রফুল্ল জীবনের তরী ভাসিয়ে দেই
ঘুম থেকে নড়ে উঠা-
সবুজ অথবা ক্লান্ত ধূসর প্রকৃতির কোলে,
কিছু অনুভূতির অলংকার খুঁজতে রীতিমতো
আমি হয়ে উঠি জরুরী জীবন যুদ্ধের সংগ্রামী চেতনা!
তোমরা আমাকে কবি বলে আখ্যা দিওনা।
কবি বলে আখ্যা দিলে
এই শহরের অলিগলিতে কেউ না কেউ থেকে যায়-
নিরবে বিস্ময়বিমূঢ় নিঃশ্বাস ফেলে
অদূরে তাকিয়ে থাকে অপেক্ষমান, হিম জলে শিক্ত হয়ে
সম্ভবত কুড়ি বছর আগেরকার ঝাপসা শাদা রঙের স্মৃতি- মূল্যবোধে আঘাত হানতে পারে তাঁর সাজানো গোছানো
জীবনে সেই সব অধুনা এই দিনে।
আমাকে তোমারা কবিতা লিখতে বলোনা।
কারো হৃদয়ে
শব্দের শান্তি উপহার দিতে আমি নিতান্তই এক ব্যর্থ জীব!
অথচ তাঁকে
শ্বাশতের তরে ভালোবেসে দিক থেকে দিগন্তের
সব সন্মানের অনু খুঁজে নিয়ে এসে
অবিরাম কাব্য সাজিয়ে চলা আমার এই অক্লান্ত প্রাণ!
তাকে সন্মানিত করতে শহরের নিয়ন আলো শরীরে মেখে কত অবিলাসী রজনী নিরবে দিয়েছে নিদ্রা বিসর্জন!
তখন পৃথিবীর অপর কোনো প্রান্তে-
দূরের দিবস সে অনুভূতির কতটুকুই বা পায় টের!
অনাহারের নির্মম বাস্তবতায় যেসব প্রহর
হাসিমুখে মরে গেছে, কবর হয়নি বলে স্মৃতিভ্রম হয়ে
মিশে গেছে নিসর্গের তমসাবৃত জগতে,
সেই সংকটময় মুহূর্তে সযত্নে শাদা কালো
শব্দে বুনে চলা শত শত ক্ষুধার্ত কবিতাও হারিয়ে যায়
বিমর্ষ প্রজাপতির মতো ডানা ঝাপটাতে ঝাপটাতে
শহরে ঘুরে বেড়ানো ফেরিওয়ালার কণ্ডৌলের ভিতর!
তোমারা আমাকে কীভাবে কবি বলবে!
যার কবিতার মতো সবকিছু হারিয়ে যায়,
অদৃশ্যে থেকে যায়,
সব সত্য অলীক রাজ্যে নিশ্চুপ থেকে যায় অনন্ত কাল!