পান্থশালার বাতাসের কথা কভুকি শুনেছো একা!
দুঃখ সুখের কত সে কাহিনী অন্তরে তার লেখা,
কত দূখীজনে করিয়াছে সেবা, দিয়ে শুশীতল ছায়া
কত সাধুজনের পায়েরধুলিতেই পাপ হয়েগেছে ধোয়া।
কত রাত-দিন স্বাগতের দীপ জ্বালিয়ে রেখেছে দ্বারে,
ক্লান্তপথিকের ক্ষণিক শান্তিতে, শান্তি দিয়েছে তারে।
সেই কতদিনে পান্থশালাকে গড়িয়া তুলিল যারা,
তাদের অনেকে আজ বেঁচেনাই, নামে বেঁচে আছে তারা।
দেয়নাই কেহ স্নেহের পরশ, ক্ষত আজ দেহময়,
পথিকের ত্বরে নিজ সমাপন,করেছে মহিমাময়।
পথিক রেখেগেছে পথের ক্লান্তি,ছিন্নবস্ত্র গুলি,
দিনে দিনে তাই বাড়িয়াছে শুধু,আবর্জনার ধূলি,
কেহদেয় নাই একঘটি জল মেঝের উপরে ঢালি
সবাই গেছেচলি তাহাকে ছাড়িয়া,স্মৃতী রয়েগেছে খালি।
এই ধরণীর পান্থশালায় আসি,কতজন গেছে চলে,
কেহ রহিলোনা বিদায় সবার ,গহিন কালেরতলে।
কতযে শুধালো,কতসে কাঁদিল, দেবোতারে ডাকি ডাকি,
“যেতেনাহি চাহি এ ধরণীকে ছাড়ি, দিয়ে নিজজনে ফাঁকি!
স্ত্রী-ধন-জন,প্রেম-ভালোবাসা,সকলি রখিয়া হেথা,
কোথা যাবো আমি, কী সুখের লাগি? মনেতে লাগিবে ব্যাথা”।
এই ‘ধরণী-পান্থশালা’, শুধালো পথিকে হাঁসি ,
“যতদিন পারো থাকো তুমি হেথা, হইয়া যে পরবাসী।
কর্মে ও ভোগে তুমি যে স্বাধীন,ফলটুকু পিছু লবে,
কর্মের ফল কেহ লহিবেনা,তোমাকে লহিতে হবে।
কর্ম-ভোগের এই গুরুভার কর্ম-বিধিতে লেখা,
ফিরিবার কালে নিয়েযেতে হবে,কভু ফিরিবেনা একা।
চাহিলেও তুমি, আমার আলয়ে স্থায়ীহবে নাতো কোনদিন,
পান্থশালা! ক্ষণিক বিশ্রামলাগি,নাহি রবে হেথা চীরদিন ।
যতপারো নামখোদাই করিয়া, রেখে যাও তুমি হেথা,
সবাই দেখিবে,সবাই পড়িবে, সকলি হবে যে বৃথা।
খোদার গড়া এই পান্থ-শালায়, কারো কোন ভেদ নাই,
একপরিচয় ‘পথের পথিক,ক্লান্ত শরীর,থাকিবার নাই ঠাঁই’।
হেথা হতে তুমি যতপার নাও, কেহ বলিবেনা কিছু,
নারী-পুরুষ,বৌদ্ধ-খৃীষ্ট কেহ নহে উঁচু-নিছু”।
খোদা-মহাজন গড়িয়াছে এই ধরণী-পান্থশালা,
কত সুধী,সাধু এলো আর গেল কখোনো পড়েনি তালা।
পান্থশালায় সবকিছু আছে,যাহা কিছু তব প্রয়োজন,
সকল জীবকে সে আপন ভাবিয়া, করেছে আপনজন।
কেউ কিছুনিয়ে আসেনা হেথায়,হেথায় সকলি পাবে,
কর্মফল লয়ে ফিরিবারকালে, সকলি ত্যেজিতে হবে।
পান্থশালার এই অমোঘ নিয়ম করিয়াছে মহাজন,
কেহনহে পর,সকলি তাহা জানে,সবাই আপনজন।
লেখক-নিশি কান্ত দাস তাং-১১-০৭-২০১৬
ফোন নং-৯৪৩৩৪৪২০৮২