একটি দুরূহ রাত্রি পার করে,ভোরের সোনালী কিরণ
কাঁচের জানালা ভেদ করে  সদ্যই পড়েছে  নির্বল দুটি
আঁখির পাতায়, রুগ্নাবাসে শয্যাগত  শত শত অর্ধমৃত
দেহেরা, কারাগার মাঝে বন্দী  অবরুদ্ধ ঘরে, রোগের
দাসত্ব অনুসারে।

একহাতে  সূঁচ  সিরিঞ্জের  শিকল, গৃহ পালিত  পশুর
শিকল রশি দিয়ে  বেঁধে রাখার মতো। নিজস্ব সীমানা
শয্যা হতে মেঝে অব্দি, এর বাইরে সে  যেতেও পারে
না, ভাঙতেও পারে না  তার  শিকলিকে, প্রাণটা যেন
আজ ওই  সূঁচ  সিরিঞ্জের  সরু  শিকলকে  অবলম্বন
করেই বেঁধে  বেঁচে আছে, ক্ষণেক বিলম্ব  করে।

দেহ নিশ্চল,কথা ধীরস্বর,হাত উঁচিয়ে বাইরের উদিত
কিরণ, ছিনিয়ে  এনে  গায়ে  মাখতে  চায়, ভূমি  পরে
সতেজ তৃণ  শিশির সিক্ত হয়ে, নুইয়ে পড়েছে মাটিতে
তাহা দেখে  চোখে মুখে, বক্ষে ভরা  দৃঢ় কৌতুহল শত
দীর্ঘ  পিপাসার্ত  অভিলাষে।

যেন কতদিন  সে, সেই শিশির সিক্ত  তৃণ মূলের উপর
পা ফেলে হাঁটেনি, সেই সোনালী ভোরের উদিত রবির
তাজা কিরণ বিশ্রান্তে গায়ে মাখতে পারেনি ।  দুঃখের
রাত্রির সময়  চির  মন্থর ধীর, না যায়  তাকে এগোনো
না যায় তাকে থামিয়ে দেওয়া।

শিকলে বাঁধা  কারাগার হতে  মুক্তির পাওয়ার  আশে
বিহ্বল প্রাণ  ক্রমাগত  হাঁসফাঁস  করে যাচ্ছে, তথাপি
তাহার, ব্যাধিতে পীড়িত দেহে  সূঁচ সিরিঞ্জের  শিকল
পরাধীন  ভাবে  তাকে,  তারই  অধীনে  পরবশ  করে
রেখেছে, অর্ধমৃত রূপে।