'দল বেঁধে কী খোঁজো তোমরা এত মন্দিরে গীর্জায়?
কিছু হারিয়েছো বুঝি?'- ভক্তবৃন্দ গর্জে ওঠে প্রায়:
'হায় লোকটা পাগল?শয়তান? নাকি রাতকানা?
'আমরা ঈশ্বর খুঁজি, তুমি বুঝি কিছুই জানো না ?
'জানি,তবে জীবনে কখনো ঈশ্বর দেখিনি কিনা,
তাই সঠিক বুঝতে পারি না তার মূল্য কথখানি।
দিনের কাজের শেষে,একটি আধুলি পাই হাতে;
ভালোবেসে পুজো করি,তাকেই ঈশ্বর ভাবি রাতে।'
পরস্পর কথা বলে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে আসে তারা:
'লোকটা নিরেট মূর্খ,অনায়াসে পাপী বলা যায়।'
বুঝি ভক্তবৃন্দ ক্ষেপে গেছে খুব, এটা স্বাভাবিক,
ভেবে ওদের সান্ত্বনা দিই,বলি: 'তা ঠিক,তা ঠিক,
পাপী কিনা একথা জানি না,তবে মূর্খ-যে তা মানি,
- তা না হলে দিনের মজুরি কেউ এভাবে হারায়?'
বেদনায় অশ্রু আসে চোখে, দেখে হাসে ভক্তবৃন্দ :
'এ কী,একে নিয়ে ভারী জ্বালা হলো দেখি আমাদের;
একটা আধুলি বৈ তো নয়, তার জন্য এত মায়া?
যাই বলো ভাই, লোকটা বেহায়া ছাড়া কিছু নয়।'
'আরে ঈশ্বরের অসীম করুণা সবাই কি পায়।'
'আর যেন না হারায়'- বলে ক্রুদ্ধ অন্য একজন
নিজের পকেট থেকে একটি আধুলি দ্যায় ছুঁড়ে;
আর সেই আধুলিটা অন্ধকারে প্রজ্বলিত হয়ে
বৃত্তাকারে ঘুরে থামে শ্রমিক পায়ের কাছে এসে ।
'কে সে?'--এই প্রশ্ন তখন আঁধারে ভেসে আসে ।