সাদা আকাশ কালো মেঘের ধর্ষণে কম্পিত ।
নগরে সে বর্ষা কোথায় ? সে ছিল ঐ গ্রামে ।
আমি তাকে পেয়েছিলাম জন্মদিনের দামে ।
জন্মেছিলাম সাত আষাঢ়ের বর্ষাডাকা ভোরে,
আঁতুর ঘরে তুষ ভিজেছে উশ্যিলারই তোড়ে ।
সে-দাবীতে বলতে পারি, বর্ষা আমার মাতা,
পুত্র দেহে জড়ানো তার ছেঁড়া শাড়ির কাঁথা ।
ঢাকায় যখন বর্ষা খুঁজে চাহি আকাশ পানে,
শূন্য আকাশ দেখে বুকটা মুচড়ে ওঠে গানে ।
বর্ষা ছিল পাকতে-শুরু ডাঁসা ভুবির স্তনে,
দিন-দুপুরে আঁধার করা যোগীশাসন বনে ।
বর্ষা ছিল ধান-ডোবানো মাঠ-ভাসানো জলে,
সাঁতার কাটা বুনো হাঁসের কামার্ত দঙ্গলে ।
তাদের কাছেই চিনেছিলাম তেপান্তরের মাঠ,
তারাই আমায় দিয়েছিল কামশ্রাস্ত্রের পাঠ ।
কামকলাতে এই যে আমার একটু বাহাদুরী,
বর্ষাবালার কাছ থেকে তা করেছিলাম চুরি ।
শ্রাবণ ঘন গহনমোহে, না জানি সেই প্রিয়া,
কার রজনীগন্ধা হয়ে ফুটেছে, ওফেলিয়া !
নগরে সে বর্ষা কোথায় ? সে থাকে ঐ গ্রামে,
জানি, তাকে ফিরে পাবো মৃত্যুদিনের দামে ।
(কাব্যগ্রন্থঃ বাৎস্যায়ন । প্রকাশকালঃ বইমেলা ২০০০। প্রকাশকঃ পার্ল পাবলিকেশন।)