কুয়াশা এলেই
মামার বাড়ির পুকুরটা
মস্ত বড় গামলা হয়ে যেত।
কে যেন তার পেটের নিচে
জ্বেলে দিত আগুন ধিকিধিকি,
তার গায়ের থেকে বেরোতে থাকত
অল্প অল্প ধোঁয়া।
কুয়াশা ঠেলে কাঁপতে কাঁপতে ধোপা দেওলাল
দাদুর দস্তানার সেই ছোট্ট বারান্দায়
ঢুকে পড়েই একটু আগুন চেয়ে নিয়ে
কানে গোঁজা বিড়িটা ধরিয়ে নিতো
সুখে মারতো টান।
কুয়াশা এলেই
বি পি আরের পরিত্যক্ত রেল লাইন
তেঁতুল গাছের হাত ধরাধরি কাঠ বাদামের গাছ
পোস্টাফিসের লাল টিনের চাল
সবাই মিলে এক সঙ্গে ভ্যানিশ।
কুয়াশা এলেই সাধনাদিদের বাড়ি
স্টেশন যাবার পূকুরপাড়ের ছোট্ট চলা পথ
রাণীর মাসির মাটির গোয়াল ঘর
সবাই কোথায় হারিয়ে যেন যেত।
একটু বেলা গড়িয়ে যাবার পর
ইন্দ্রজালের মায়ার অবসান,
বি পি আরের পরিত্যক্ত লাইন থেকে সবই
কেমন করে ফিরে আসত সবাই
পোস্টাফিসের পাঁচিল টপকে তখন
সূর্য গেছে অনেক খানি উঠে।
দিন চলে গেছে কুয়াশা পেরিয়ে বহু যোজন দূর
কুয়াশা এখনো আসে আগের মতো
শুধু কুয়াশার পারে হারিয়ে যাওয়া
পরিত্যক্ত লাইন, কাঠ বাদামের গাছ,
রাণীর মাসীর মাটির গোয়াল ঘর
পোস্টাফিসের লাল টিনের চাল
আরো আরো আর যা হারিয়ে যেত
সারাটা বেলা গড়িয়ে যাবার পরও
ভ্যানিশই থেকে গেল।