রিভলভিং চেয়ার এক আজব বস্তু বটে,
যে কেউ হেঁজিপেঁজি সে চেয়ারে বসেনা।
মহাকরণের পাঁচুবাবু
বি ডি ও অফিসের সন্ধ্যাদিরা
এই চেয়ারে বসার সুযোগ পায় না।
যারা পায়, এ চেয়ার তাকে সময় মতো
বাঁদিকে , ডানদিকে সামনে পিছনে ঘুরতে দেয়
এমনকি মাঝে মাঝে আরাম করার
জন্য পিছনেও হেলে পড়তে দেয়।
কিন্তু কখনো নিচের দিকে
ঝুঁকে পড়তে দেয় না।
যারা এ চেয়ারে বসে
তাদের অনেকেরই ব্যাপারটা বিলকুল নাপসন্দ
এমন সব কুরসিওয়ালারা তখন
ও চেয়ারে বসা অবস্থাতেই
মাথাটা সন্তর্পণে ঝোঁকাবার চেষ্টা করে
তাদের ঘাড়ে যন্ত্রণা হয়
যেসব কুরসিওয়ালার ততদিনে মাথা বিলকুল ঝুঁকে গেছে,
তারা উৎসাহ দেয়
সমস্বরে বলে, প্রথম প্রথম একটু লাগে বটে
তবে একবার যদি শিরদাঁড়া খুইয়ে
অমেরুদণ্ডী প্রাণী হয়ে যাও তবে আর চিন্তা নেই,
উত্তোলিত ঘাড় আপনিই নুয়ে পড়বে ।
সবাই চলে গেলে
অফিসের আলো নিভে গেলে
রাগে, দুঃখে,অভিমানে
চেয়ারটা সারারাত একা একা জেগে বসে থাকে।
কখনো সখনো এমন লোকও আসে
যারা মাথা ঝোঁকাতে নারাজ।
চেয়ারটার তখন খুব আনন্দ হয়,
চেয়ারটা প্রাণপণে তাদের আঁকড়ে ধরতে চায়
কিন্তু সেসব লোক দুদিন পরেই কোথায় যে যায়...
খুব বেশি মাথা ঝোঁকালে অবশ্য
চেয়ারগুলো সহ্য করে না
চেয়ার সমেত উল্টে দেয়,
তবে এটুকু ক্ষমতায় চেয়ারগুলো হতাশ হয়।
তারা চায় একটু ঝুঁকলেই উল্টো ফেলে দিতে।
রিভলভিং চেয়ারের স্বপ্ন অধরাই থেকে যায়।