প্রখর রোদ্দুর,
একটা প্রকাণ্ড বটগাছের ছায়ায় দাঁড়িয়ে
একা একা এক অষ্টাদশী
আঁচলে ঘাম মুছছিল
আর চিৎকার করছিল,
মে দিবস দিচ্ছে ডাক !
মে দিবস দিচ্ছে ডাক !
রাস্তা দিয়ে যারা এ সি গাড়ি চেপে
কেউ দীঘা, কেউ তাজপূর
কেউ বা নিদেন পক্ষে রেস্টুরেন্টের দিকে যাচ্ছিল,
তাদের মধ্যে কেউ কিছুই শুনলো না
কেউ শোনবার চেষ্টা করলো কিন্তু গাড়ির কাচ তোলা ,এসি চলছে , গাড়ি দ্রুতগতি ,
তাই চোষ্টা করেও কিছূ শুনতে পেল না।
কিছু মানুষ যাদের আজকের দিনেও ছুটি নেই
তারা উর্ধ্বশ্বাসে কাজে যাবার জন্য দৌড়ল,
মেয়েটির কথা শোনার সময় নেই তাদের—
পেটের দায় বড় দায়।
একজন কমরেড পার্টি অফিসের
ভাঙা তবুও তালা মারা দরজাটা খুলে
একটা কাস্তে হাতুড়ি আঁকা লাল পতাকা বার করতে করতে,
একটা ক্ষীণ আওয়াজ কানে যেতে আড় চোখে দেখলেন ,
দূরে গাছের তলায় এক অষ্টাদশী প্রাণপণ চিৎকার করে কিছু একটা বলছে,
কিন্তু মেয়েটি এতটাই দূরে যে কমরেড তাকে ভালো করে দেখতেও পারছেন না।
একজন প্রেস ফটোগ্রাফার মোটরবাইক থামিয়ে
খচাখচ ছবি তুলে মোটরবাইক স্টার্ট দিয়ে ধাঁ করে বেরিয়ে গেলেন
তাঁর কাগজে আজ লেখা আছে
"আজ মে দিবস, তবে ছুটি নয়
কাল আমাদের ই সংস্করণ সম্পূর্ণ বিনামূল্যে।"
মেয়েটির ছবি কাল বিনামূল্যে পাঠক দেখতে পাবে।
রাস্তা দিয়ে হুংকার বাজিয়ে মূখ্য মন্ত্রীর কনভয়
ভোটের প্রচারে যেতে যেতে মেয়েটিকে দেখে
আপ্ত সহায়ককে জিগ্যেস করে নেন,
আজ চেম্বার অফ কমার্স গুলোর কাছে
সরকারি ছুটির নোটিশ ঠিক ঠাক গেছে তো ?
বিরোধী দলনেতা মূখ্য মন্ত্রীকে আক্রমণ করার সময়
মে দিবসের থিমটা কি ভাবে ঢুকিয়ে দেবেন
ভাবতে বসলেন।
মেয়েটি চিৎকার করে চলেছে,
মে দিবস দিচ্ছে ডাক !
মে দিবস দিচ্ছে ডাক !
সবাই ভাবছে কেউ শুনছে না।
কিন্তু মেয়েটা জানে কেউ কেউ ঠিক শুনছে।
মেয়েটি আঁচলে ঘাম মুছছে
ঘাম মুছছে, ঘাম মুছছে .....