সক্কাল বেলা বারান্দার গ্রিল গলে
একটা ঘুঘু ঢুকে পড়তে দেখে
আমি একটি আপ্ত বাক্যের দিকে
বহু যুগ পরে ঘুরে দাঁড়িয়ে
বিড় বিড় করে বলে ফেলি
ঘুঘু দেখেছো ঘুঘুর ফাঁদ তো দেখোনি !
চারিদিকে ভয়ে ভয়ে তাকাই,
কেউ শুনে ফেলেছে কিনা
প্রত্যয় করি ।
ঘুঘুটি তখন এধার ওধার পায়চারি করে
আমি অপেক্ষা করতে থাকি
আমার বারান্দটা কি অভিমন্যুর বুহ্য ?
ছি:, নিজেকেই নিজে ধিক্কার দিই
শেষ পর্যন্ত একটা ঘুঘু কিনা বীর অভিমন্যু ?
তবু ভাবি ঘুঘু অভিমন্যু না হোক
আমার বারান্দা হোক চক্রব্যুহ !
এই নরক-মুলুকে মহাভারতের
একটি সংশোধিত সংস্করণ লিখে তো ফেলাই যায়।
ঘুঘুটি তখন উড়ে বেরোতে গিয়ে গ্রিলে ধাক্কা খেয়ে
বারান্দার মেঝেতে এসে বসে
একটু বিশ্রাম নেয়
আর আমি কেউ যাতে শুনতে না পায়
এমন ভাবে বলি,
ঘুঘু দেখেছি, ঘঘুর ....
বাইরে অপেক্ষমান পাইক বরকন্দাজ
এম্বুলেন্সের সাইরেন
তারা ঘুঘুটির স্বচ্ছন্দ নিষ্ক্রমণে
সতত সচেষ্ট
ঘুঘুটি দ্বিতীয়বার বেরোতে গিয়ে
ডানা ঝাপটে বারান্দায় আছাড় খায়
আমার ভয় করে ---
ঘুঘুটা বেরিয়ে যাবেনা তো ?
ঘুঘুটিরও চোখে দেখি ভয়---
ফেঁসে যাবো না তো ?
কেউ যাতে শুনতে না পায়
আমি আস্তে আস্তে বলি,
ঘুঘু দেখেছ....
ঘুঘুটি ঘুরপাক খায়
বাইরে পাইক বরকন্দাজ
চিৎকার ওঠে
বেরিয়ে আসুন স্যার!
ঘুঘুটি আর একবার চেষ্টা করে
ডানা ঝাপটায় আছড়ে পড়ে
ধীরে ধীর এক চিলতে একটা বারান্দা
প্রকাশ পায় চক্রব্যুহ রূপে
নিজেকে শুনতে পাবার মতো করে বলি
ঘুঘু...