কবি রীণা বিশ্বাস(হাসি) এর কবিতা
    অনন্ত 'ওদের' প্রকাশ এসো
-------------------------------
অনন্ত- মহাব্যোম,কিছু কথা বলবো কি?
না কি তোমার কাছে নীরবতাটাই ভালো?
আজ কিন্তু তোমার উত্তরটা চাই জোড়ালো,
নীরবতাতে আনন্দিত সদুত্তরে অছিলায়?
সাধন অপেক্ষায় থাকলাম তো কতকাল ধরে
সময় চলে গেলো প্রশ্ন থাকলো নিগূঢ় অন্তরে,
অন্ন নেই,নেই চালচুলো,নেই তোমার গড়া
মাটির দুনিয়ায় একফোঁটা ভালোবাসা
তবু ওরা ঘর বাঁধে,তবু বুকে নবনব আশা,
ভেবে উত্তর দিও,'অসীমের সমষ্টি সসীম' না
হলে তোমার প্রকাশটা কোথায় দাঁড়ায়?
তোমার মাঝেই সকলে আসার হাত বাড়ায়,
নীরবতা ভেঙে দিলাম-এবার এসো আমার
কাঙ্খিত প্রশ্নের মাঝখানে,তুমি কি অনুভবে?
সেটাই প্রকট করো অসহায়ের সহায়-সম্ভবে,
প্রকাশ করো সমতার প্রেম,উদ্ভাসিত হও
দীন হীন অনাহার ক্লিষ্ট মানুষের মাঝখানে
তোমার হেমের প্রকাশ অক্ষয় রবে সেইখানে..

বিশ্লেষণ
--------------------------
এখানে কবি যে প্রশ্নটা রেখেছেন
সেটি হলো ভগবানের কাছে,
তার কথায় দীন হীন সেই সব মানুষ যারা
সবসময় আসার হাত বাড়িয়ে দেয় তারদিকে
জীবনের না নান প্রতিকূলতার মাঝে
তাদের মধ্যে তিনি যেন প্রকাশ হন
তাদের পাশে এসে দাঁড়ান
সাম্য বজায় রেখে ভালোবাসা ছড়িয়ে দিন
আর নিজের অক্ষয় প্রকাশ বর্তমান থাকুক...

বিস্তারিত
---------------
এই যে প্রশ্নটা করা হলো 'ভগবান' কে
আসলে আগে জানা দরকার যাকে আমরা ভগবান, আল্লাহ, গড বলি
সে কে?
আমরা বিভিন্ন নামে তাকে ডেকে থাকি
বিভিন্ন পথে তাকে খুঁজি
মন্দিরে মজজিতে গীর্জায় সর্বত্র...
আসলে সকল বিদ্যা সকল দেবতা এবং সকল তীর্থ এই দেহের মধ্যেই বর্তমান
এই দেহেই স্বর্গ মর্ত্ত পাতাল ত্রিলোকের অবস্থান,
বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ডের সবকিছুই এই দেহে বর্তমান
সংসারে থেকে বাহ্যিক মোহ ত্যাগ
প্রাণের সেবা ইহাই পরম ধর্ম
বাহ্যিক বলতে পূজাপাঠ তপস্যা মন্ত্র তন্ত্র
এসব ত্যাগে যতপ্রকার লৌকিক ধর্মকর্ম ত্যাগ....
কবির বলেছেন 'এককে না জানিয়া সবকিছু জানিতে যাওয়া বৃথা,সেই এক হইতে সবকিছু হইয়াছে, সবকিছুতেই সেই এক বর্তমান,
এই এককে জানিলেই মুক্তি
স্পর্শ রসনা, ঘ্রাণ,চক্ষু এবং কর্ণ এই পাঁচ ইন্দ্রিয়ের তত্ত্ব তার ওপরেই মনরূপী ইন্দ্রিয়
এই মনের ওপরে যে বিন্দু তাতেই আটক থাকা উচিত,
জগত দৃশ্যমান
আর আমরাই এর দ্রষ্টা
সত্ত্ব রজ তম এই তিন গুনই তিন দেবতা
ব্রহ্মা সৃষ্টি কর্তা অর্থাত্ রজোগুণ,
মহেশ্বর নিধন কর্ত্তা অর্থাত্ তমোগুণ
এবং বিষ্ণু পালন কর্ত্তা অর্থাত্ সত্ত্বগুণ
এই তিন গুণের পরিচালক আমরায়
কারণ দেহ অভ্যন্তরে এই তিন গুণ প্রাণশক্তির দ্বারা পরিচালিত
প্রাণ না থাকিলে উক্ত তিন গুণও থাকে না
অর্থাত্ প্রাণই হলো ভগবান
ইহাই সর্বত্র ইহাই আমি আমরা
যতক্ষণ প্রাণকে জানবে না
অন্যান্য ইন্দ্রিয় তোমাকে জানবে না
তাই যতক্ষণ প্রাণ
ততক্ষণ তার প্রকাশ
তাকে খুঁজতে হলে নিজেকে নিজের ভিতরের আত্মসূর্য কে জানো
সে তো সবার মধ্যে
সঠিক কর্মে সতগতি......

-------------------------------
জানিনা ঠিক বিশ্লেষণ হলো কিনা
চেষ্টা করলাম
(জেনেছি পুরাণ পুরুষ থেকে)
সবাইকে ধন্যবাদ