একটা ছেলে ছিল। এটা গল্প নয়।
ছেলেটার একটা হৃদয় ছিল। এটা কবিতা নয়।
ছেলেটার একটা বাড়ি ছিল। এটা উপন্যাস নয়।
ছেলেটা ভালোবাসায় বিশ্বাস করত। এটা মহাপুরুষের বাণী নয়।
হঠাৎ একদিন সব হারিয়ে গেল। এটা ইতিহাস নয়।
শুধু ছেলেটা হারালো না। এটা অলৌকিকতা নয়।
ছেলেটা এখন মাটি খুঁড়ে শিকড় খুঁজছে। এটা ভুগোল নয়।
ছেলেটা পেলো শিকড়। আদিম শিকড় - প্রাণের সাথে পৃথিবীর যোগসূত্র।
একটা জীবনের ছেঁড়া পাতার কয়েকটা পঙক্তি।
ছেলেটা বেঁচে আছে। রাস্তার ধারে একটা বাড়ি বানিয়েছে। ছোট্ট।
তার সামনে একটা বাগান করেছে। ছোট্ট।
তার বাগানের ফুল, ফল সে হাত বাড়িয়ে পথিকদের দেয়। এমনিই।
সে পাখির মত গান গায়। আকাশের মত ভাবে। বর্ষার মত কাঁদে। রাত্রির মত হাঁটে। ভোরের মত তাকায়। সে বাদল শেষের বাতাসের মত ছোঁয়।
ছেলেটা ধরা দেয় না আর কারোর কাছেই। সে বলেছে মরণকেই শুধু দেবে ধরা।
মরণ আসবে কোন পথে, সে জানে। ওই যে তার বাড়ির সামনে নীল-সবুজ মেশানো পাহাড়! তার ওপার থেকে আসবে মরণ।
সে বলেছে তাকে সাদা জুঁইয়ের মালা পরে আসতে গলায়। গন্ধেই যাতে চিনতে পারে। আর সে যেন না জানিয়েই আসে। তবে সে গোছাতে সময় পাবে না কিছুরই, পাহাড়ের ওপারে নিয়ে যাবে বলে।
সব কাজ শেষ হয়ে গেলে সে যখন আলো নিভিয়ে শুতে যায়, তখন কে যেন এসে বসে তার মাথার পাশে। নীল তার আঁচল। পাদুটো রাঙা।
ছেলেটা আপনিই ঘুমের মধ্যে তার হাতটা ওর হাতে দিয়ে দেয়। গভীর ঘুমে তলিয়ে যায়।
যখন সে ঘুম থেকে ওঠে, তখন তার হাতে পায় জুঁইয়ের গন্ধ। সে ভাবে কে দিল? তবে কি সে রোজ আসে?